ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

Motobad news

আজ বিশ্ব মোল দিবস

আজ বিশ্ব মোল দিবস
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

 
২৩ অক্টোবর, আজ  বিশ্ব মোল দিবস। প্রতি বছর অক্টোবর মাসের ২৩ তারিখে সারাবিশ্বে দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটি পালন তারিখের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। দিবসটি পালনের দিনটি নির্ধারণ করা হয়েছে, অ্যাভোগাড্রো সংখ্যা মানের উপর ভিত্তি করে। অ্যাভোগাড্রো সংখা মান হলো ৬.০২×১০^২৩। এজন্য আমেরিকায়  অক্টোবর মাসের ২৩ তারিখে সকাল ৬.০২ থেকে সন্ধ্যা ৬.০২ পর্যন্ত পালিত হয়ে থাকে। সময়টি এসেছে ৬.০২ থেকে আর দিন,মাসটি নির্ধারন করা হয়েছে ১০^২৩ থেকে অর্থাৎ ইংরেজি  ১০ম মাসের ২৩ তারিখ।

১৯৮০ সালের শুরুতে 'দ্য সায়েন্স টিচার' নামক প্রবন্ধ থেকে মোল দিবস কথাটি আসে। এই নিবন্ধটি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, মরিস ওলার ১৫ই মে, ১৯৯১ সালে, 'জাতীয় মোল দিবস সংস্থা' প্রতিষ্ঠা করেন। যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডার বিভিন্ন বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষার্থীদের রসায়নের প্রতি আগ্রহী করতে মোল দিবস পালন করা হয়। এদিনে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিষয়ক সেমিনার আয়োজন করা হয়। আমাদের দেশেও বর্তমানে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনটি পালিত হয়ে আসছে। অ্যাভোগ্যাড্রো সংখা বলতে বোঝায়  এক মোল পদার্থের কণার মধ্যে কতটি পরমাণু বা অণু রয়েছে।

অ্যাভোগাড্রো সংখ্যার নামকরণ করা হয়েছে ১৯ শতকের ইতালীয় রসায়নবিদ আমাদিও আভোগাদ্রোর নামানুসারে। ১৮১১ সালে তিনি সর্ব প্রথম প্রস্তাব করেন যে 'কোন গ্যাসের আয়তন স্থির তাপমাত্রা ও চাপে তাতে বিদ্যমান অণু বা পরমাণু সংখ্যার সমান'। এজন্য পরবর্তীতে মৃত্যুর পর তার সন্মানার্থে অ্যাভোগাড্রো সংখ্যাকে N দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
 
১৯০৯ সালে ফরাসী বিজ্ঞানী জিন বাপটিস্ট পেরিন ধ্রুবসংখ্যাটিকে অ্যাভোগাড্রোর সম্মানে নামকরণের প্রস্তাব করেন। পেরিন বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় অ্যাভোগাড্রো সংখ্যার মান নির্ণয়ের চেষ্টা করেন এবং এ কারনে ১৯২৬ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

পেরিন মূলত অক্সিজেনের এক গ্রাম অণুতে বিদ্যমান অণুর সংখ্যাকেই অ্যাভোগাড্রো সংখ্যা N নামকরণের প্রস্তাব করেছিলেন, যেটা এখনো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, বিশেষত প্রাথমিক গবেষণা কাজ গুলোতে। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে যখন পরিমাপের আন্তর্জাতিক একক (SI) এ মোল কে একটি মৌলিক এককে রূপান্তর করা হলো তখন এর নাম পরিবর্তন করে অ্যাভোগাড্রো ধ্রুবক N রাখা হয়, যা কোন বস্তুতে উপস্থিত পদার্থের পরিমাণ প্রকাশ করে এবং পরিমাপের মাত্রার উপর নির্ভর করে না। 

এই স্বীকৃতির ফলে অ্যাভোগাড্রো সংখ্যা N আর একটি বিশুদ্ধ সংখ্যা নয়, এর একক রয়েছে যা হচ্ছে মোলের বিপরীত রাশি (মোল−1)। যদিও পদার্থের পরিমাণ প্রকাশে সাধারণত মোলই ব্যবহৃত হয়, অ্যাভোগাড্রো সংখ্যাকে আরো কিছু এককের মাধ্যমেও প্রকাশ করা হয়, যেমন পাউন্ড মোল (lb-mol) কিংবা আউন্স মোল (oz-mol)।

১৮৬৫ সালে সর্বপ্রথম জোহান জোসেফ লসমিডট্‌ ধ্রুবসংখ্যাটির মান নির্দেশ করেন। তিনি একটি নির্দিষ্ট আয়তনে অণুর সংখ্যা গণনা করার মতো একি ধরনের একটি প্রক্রিয়ায় বাতাসের অণুগুলোর গড় ব্যাস নির্ণয় করতে সমর্থ হন। তার সম্মানে একক আয়তনে গ্যাসের অণুর সংখ্যাকে লসমিডট্‌ ধ্রুবক নামকরণ করা হয়েছে যা কিনা অ্যাভোগাড্রো সংখ্যার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।

অ্যাভোগাড্রো সংখ্যার নির্ভুল মান নির্ণয় করা সম্ভব হয় যখন ১৯১০ সালে আমেরিকান পদার্থবিজ্ঞানী রবার্ট মিলিকান একটা ইলেকট্রনের চার্জ পরিমাপ করেন। ১৮৩৪ সালে মাইকেল ফ্যারাডের তড়িৎ বিশ্লেষণ এর গবেষণা গুলো থেকে জানা যায় এক মোল ইলেকট্রনের চার্জ সর্বদা স্থির বা ধ্রুব, যাকে বলা হয় এক ফ্যারাডে। এক মোল ইলেকট্রনের চার্জকে একটা ইলেকট্রনের চার্জ দিয়ে ভাগ করে অ্যাভোগাড্রো সংখ্যার মান নির্ণয় করা যায়।


এসএম
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন