ঢাকা রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news
 শ্রাবন্তির চিৎকার ভাইরাল

৭ দিনেই সংসার ভাঙলো কামরুলের

৭ দিনেই সংসার ভাঙলো কামরুলের
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

প্রেমের সূত্র ধরে ঘর পলাতক গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার বাসিন্দা শ্রাবন্তি রাণী মন্ডলকে নিয়ে গেছেন তার স্বজনরা। 

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) ভোলা জেলার দৌলতখান থানার চরখলিফা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের আলী হোসেনের বাড়ি থেকে স্থানীয় শালিসের মাধ্যমে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। শ্রাবন্তিকে নিয়ে যাওয়ার সময়ের কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সমালোচনার ঝড় চলছে নেটিজেনদের মাঝে। 

একই সাথে ঘর পলাতক শ্রবান্তি অপহরণ হয়েছে এমন মামলা দেয়ায় সামালোচনার মাত্রা আরো বাড়িয়েছে।

দৌলতখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বজলার রহমান বলেন, গাজীপুরের একটি মামলায় পুলিশ সাহায্য চাইলে আমরা সেই মেয়েকে উদ্ধারে সাহায্য করি। তবে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে পুলিশের উপস্থিতি ছিলনা উলে­খ করলে তিনি জানান, সিভিল ড্রেসে পুলিশ ছিল। অপরহরণ মামলা হলেও ঘটনাটি একটি প্রেম ঘটিত ব্যাপার বলে স্বীকার করেন এই কর্মকর্তা। কিন্তু মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়ায় অভিভাবকের সিদ্ধান্ত আইনসিদ্ধ বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, গাজীপুর উপজেলায় একটি ফ্যান কোম্পানীতে কাজ করতেন দৌলতখানের আলী হোসেনের ছেলে কামরুল ইসলাম। সেখানে পরিচয় হয় শ্রাবন্তি রাণী মন্ডল ও কামরুলের সাথে। 

কামরুল জানান, আমাদের প্রথম পরিচয় যখন হয় তখন শ্রাবন্তি অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। যখন দুই বছর প্রেমের সর্ম্পক চলছিল তখন জানাজানি হলে ওর লেখাপড়া বন্ধ করে দেন পরিবার। আমি চট্টগ্রামে চলে যাই। সেখানে একটি জাহাজে চাকরী নেই।

সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল শ্রাবন্তি আমার সাথে চলে আসেন দৌলতখানে। ১৫ এপ্রিল নোটারির মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। ওর নতুন নাম দেওয়া হয় জান্নাতুল ফেরদৌস। এরপরে আমরা বিয়ে করি। শুক্রবার থেকে আমরা একই ঘরে সংসার শুরু করি।

কামরুল ইসলাম বলেন, পরে জানতে পারি জান্নাতুল ফেরদৌসের পিতা শংকর চন্দ্র মণ্ডল আমার নামে অপহরণ মামলা দিয়েছেন। পরের শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) লোকজন নিয়ে এসে তারা আমার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যায়।

কামরুলের আরেক ভাই নুরুজ্জামান দাবি করেন, স্থানীয় প্রভাবশালী কামাল তুফানি নামে এক লোক ভয়ভীতি দেখিয়ে ওদের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে কামরুলের স্ত্রীকে তার মা-বাবার কাছে দিয়ে দেন। নুরুজ্জামান দাবী করেন, যেহেতু একটি বিয়ে হয়েছে এবং একটি সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেটি থানা-পুলিশের লোক সমাধান করতে পারতো। 

আইন যা বলে সেটিই হত। কিন্তু একটি মেয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছে স্বেচ্ছায়, সেদিন কামরুলের স্ত্রী বোরকা পড়েই শালিসে গিয়েছিল। কিন্তু কামাল তুফানি সেই বোরকা টেনে খুলে ফেলে মেয়েকে তার পিতার কাছে দিয়ে দেন। ওইদিন কোন পুলিশ আসেনি। যা মনে চায় সেটাই করেছেন কামাল তুফানি।

ওদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শ্রাবন্তি রাণী মন্ডল ওরফে জান্নাতুল ফেরদৌস চিৎকার করে সবাইকে বলছিল সে তার মা-বাবার কাছে যাবে না। কামরুল তার স্বামী, তার সাথেই থাকবে। এসময়ে স্থানীয় এক মেম্বারের পা ধরে কান্না করতেও দেখা যায়।

কামরুল বলেন, আমি যদি অপহরণ করতাম তাহলে আমার স্ত্রীকে নিয়েতো লুকিয়ে থাকতাম। তাকে নিয়েতো শালিসে যেতাম না। আমার স্ত্রী সবার সামনে চিৎকার করে বলেছে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছে। 

সে আমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। তারপরও কেউ আমাদের সাহায্য করতে আসেনি। আমার সংসার ৭দিনেই ভেঙে দিলো। কামরুল দাবী করেন তার স্ত্রীর বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে। ২০০৩ সালের ৩ মার্চ গাজীপুরে শংকর চন্দ্র মন্ডল ও নিয়তি রানী মন্ডলের ঘরে জন্ম নেন শ্রাবন্তি রাণী মন্ডল। 

ওদিকে জান্নাতুলের না ফিরে যাওযার জন্য আকুতির ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় আজ দুপুরে ‘দৌলখান থানা’ ফেসবুক এ্যাকাউন্টে ঘটনাটি নিয়ে ব্যখ্যা দেয় দৌলতখান থানার ওসি। তিনি সেখানে দাবী করেন, গাজীপুর থানায় ২৩ এপ্রিল দায়ের করা মামলার সূত্র ধরে অপহরণকৃত অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু শ্রাবন্তি রাণী মন্ডল (১৫)কে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লুৎফর রহমান উদ্ধার করে নিয়ে যায়। সেই স্ট্যাটাসের নিচে পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন জনকে কমেন্ট করতে দেখা গেছে।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন