বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু ভারত: শাহরিয়ার

কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৭২ ঘণ্টার ভালোবাসা নিয়ে দেশে ফিরব। পশ্চিমবাংলাবাসী এখনও ভোলেনি ৫০ বছর আগের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
তিনি বলেন, আপনারা সেদিনও পাশে ছিলেন, আজও আছেন। বাংলার ভালোবাসা আজও অটুট। আমি মনে করি বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু ভারত। এরমধ্যে কোনো কৃত্রিমতা নেই।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে শনিবার (১১ ডিসেম্বর) কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এদিন বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন এবং কলকাতার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’র যৌথ সহযোগিতায় মেজর (অব.) এ এস এম শামসুল আরেফিন সম্পাদিত ‘বাংলাদেশ @৫০’ এবং সত্যম রায় চৌধুরী সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু ফর ইউ’ শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হুমায়ূন কবীর, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো ড. শ্রীরাধা দত্ত, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননাপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক মানস ঘোষ, কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিষ সূর। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওনার আমলে পশ্চিমবঙ্গের রাস্তাঘাট এবং ট্রাফিক লক্ষ্যণীয়ভাবে উন্নয়ন হয়েছে। গাড়ি চালিয়ে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান গেছি। এমনকি কলকাতাতেও গাড়ি চালিয়ে এসেছি। রোববারও গাড়ি চালিয়ে পেট্রাপোল যাবো। সেখান থেকে বাংলাদেশে ফিরব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, হাইওয়েতেও ৮০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে কেউ গাড়ি চালাচ্ছেন না। চমৎকার সড়ক, যানজট নেই, দুর্ঘটনার ঝুঁকিও কম। অন্তত ঢাকার থেকে কম। পশ্চিমবঙ্গের ট্রাফিক পরিচালনা ব্যবস্থার প্রশংসা করেনি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
তিনদিনের সফরে ভারতে এসেছেন শাহরিয়ার আলম। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজশাহী থেকে সোনা মসজিদ-মেহেদিপুর সীমান্ত চেকপোস্ট হয়ে সড়ক পথে সপরিবারে মুর্শিদাবাদে কান্দিতে আত্মীয়ের বাড়িতে যান তিনি। সেখানে কান্দির রাজ কলেজ পরিদর্শন করেন। ওই কলেজে শিক্ষার্থী ছিলেন তার বাবা। কলেজের তরফে মন্ত্রীকে স্বাগত জানান কলেজের অধ্যক্ষ ড. সোমা দত্তসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। কলেজ প্রাঙ্গণে ভাষা শহীদ আবুল, বরকতের আবক্ষ মূর্তি, অমর একুশের স্মৃতি সৌধতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন মন্ত্রী। মন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন তার বাবা মোহাম্মদ শামসুদ্দিনসহ ঘনিষ্ঠ কয়েকজন।
কলেজ পরিদর্শনের পর ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী কান্দির শিক্ষার্থী রুমানা সুলতানার বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শাহরিয়ার আলম ও তার বাবা। সেখানে রুমানা সুলতানাকে মিষ্টি মুখ করান শাহরিয়ার আলম। সুলতানাকে একটি জ্যাকেট উপহার দেন তিনি। ছাত্রীটিকে সম্বর্ধনা জানানোর পাশাপাশি তার পরিবারের হাতে বাংলাদেশের ইলিশ মাছ তুলে দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
এরপর শুক্রবার (১০ ডিসম্বর) শাহরিয়ার আলম গিয়েছিলেন বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় করজ গ্রামে মামার বাড়িতে একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যোগ দিতে। শনিবার কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তিনি।
এসএম