২১০০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা বাড়তে পারে সাড়ে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস

গ্রিনহাউজ গ্যাস কমানো না গেলে ২০৪১-২০৭০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। এছাড়া ২১০০ সালের মধ্যে দেড় থেকে সাড়ে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জলবায়ুর রিপোর্ট-২০২৫ নামে এক গবেষণায়।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং নরওয়েজিয়ান মেটিরিওলজিক্যাল ইন্সটিটিউটের যৌথ উদ্যেগে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ ও গবেষক বজলুর রশিদ বলেন, দেশে বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন হতে পারে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বর্ষায় অতিরিক্ত বৃষ্টি এবং শতাব্দীর শেষে মোট বৃষ্টিপাত গড়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বাড়তে পারে। পাশাপাশি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এসব অতিবৃষ্টির ফলে বন্যা ও ভূমিধসও বাড়বে।
তিনি বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার ফলে পৃথিবী গরম হওয়ায় সমুদ্রের পানি ফুলে ওঠে ও বরফ গলে পানি বাড়ে। এর ফলে বাংলাদেশে উপকূলীয় এলাকায় বন্যা বাড়বে। ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৯ লাখ মানুষ স্থায়ী বন্যার কারণে জায়গা হারাতে পারেন।
পাশাপাশি তাপপ্রবাহ আরও বেড়ে যাবে এবং দেশের পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় সারা বছরই তীব্র গরম থাকতে পারে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।
জলবায়ুর এই পরিবর্তন মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবিকায় প্রভাব ফেলবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেশি গরমে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি বাড়বে আর তীব্র গরমে শ্রমিকদের কাজ করা কঠিন হবে। তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়বে। সমুদ্রের পানি বাড়লে লবণাক্ততা বাড়বে। এতে করে ফসল, মাছ ধরা ও পানির উৎস ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্রতিবেদনের সুপারিশ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন একদিনে থামানো যাবে না, এমনকি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমালেও কিছু পরিবর্তন হবে। কিন্তু গ্যাস ও দূষণ কমানো না গেলে ভবিষ্যতের ক্ষতি ভয়াবহ হবে। তাই দুভাবে কাজ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো- দূষণ কমানো এবং ক্ষতি কমাতে প্রস্তুতি হিসেবে বাঁধ, আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি ও পূর্বাভাস পেতে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার।
অন্য বক্তারা বলেন, পৃথিবীর জলবায়ু খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। এর বড় প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে, বাংলাদেশ সমতল, নদীনির্ভর, জনবহুল এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এইচ ই হ্যাকন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন, বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক, আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক, কাজী জেবুন্নেছাসহ সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও সেভ দ্য চিলড্রেনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এইচকেআর