ঢাকা শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

‘ফুল না ফোটায়’ কিম জং উনের সাজার মুখে মালীরা

‘ফুল না ফোটায়’ কিম জং উনের সাজার মুখে মালীরা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের বাবার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় ফুল সময়মতো না ফোটায় এর পরিচর্যাকারীদের কঠিন সাজা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে, ওই বিশেষ ধরনের ফুল চাষে তৈরি গ্রিনহাউজের ব্যবস্থাপককে ছয় মাস লেবার ক্যাম্পে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বৈরশাসক কিম। সাজা পেয়েছেন দায়িত্বে থাকা আরও কয়েকজন।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি এ খবর প্রথম প্রকাশ্যে আনে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি এনকে। পরে সংবাদমাধ্যমটির বরাতে একই খবর প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের ডেইল মিরর, ডেইলি মেইলও।

খবরে বলা হয়েছে, ১৬ ফেব্রুয়ারি উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের বাবা কিম জং-ইলের জন্মদিন। স্থানীয়ভাবে এটি ‘ডে অব দ্য শাইনিং স্টার’ বা উজ্জ্বল তারার দিন বলে পরিচিত। প্রতি বছর এ দিনটি মহাধুমধামে উদযাপন করে উত্তর কোরিয়া। এবারের আয়োজনের কেন্দ্রে থাকার কথা ছিল ‘কিমজঙ্গিলিয়া বেগোনিয়াস’ নামে একটি ফুল, যার নামকরণই হয়েছে কিম জং উনের বাবার নামে।

 

ডেইলি এনকে’র খবর অনুসারে, সময়মতো কিমজঙ্গিলিয়া না ফোটায় এবারের ‘ডে অব দ্য শাইনিং স্টার’র আয়োজনে ফুলটি সরবরাহ করা যাবে না শুনে বেজায় ক্ষেপেছে কিম প্রশাসন। এটি চাষের দায়িত্বে থাকা মালীদের কঠিন সাজা দিয়েছে তারা।

বলা হচ্ছে, সামসু কাউন্টির হান নামে ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি কিমজঙ্গিলিয়া ও কিমিলসুঙ্গিয়া ফুল চাষে ব্যবহৃত একটি গ্রিনহাউজের ব্যবস্থাপক ছিলেন। তাকে ছয় মাস লেবার ক্যাম্পে কাটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কিমজঙ্গিলিয়া ফুলটি জাপানি উদ্ভিদবিজ্ঞানী কামো মোটোতেরু উদ্ভাবন করেছিলেন। তিনি উত্তর কোরিয়ার প্রয়াত নেতাকে অত্যন্ত সম্মান করতেন এবং তার সম্মানে ২০ বছর গবেষণা করে ফুলের নতুন জাতটি উদ্ভাবন করেন। এটি মূলত দক্ষিণ আমেরিকার টিউবারাস বেগোনিয়ার একটি হাইব্রিড জাত।

 

কিমজঙ্গিলিয়া চাষের জন্য গ্রিনহাউজে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা সাবধানতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। তবে হান তার দায়িত্বে অবহেলা করায় সময়মতো ফুল ফুটছে না বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

জানা যায়, কিমের বাবার এবারের জন্মদিন আরও বড় পরিসরে উদযাপনের সিদ্ধান্ত হয় গত মাসে। এসময় সামসু কাউন্টিকে কিমজঙ্গিলিয়া ফুলের একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

হান বলেছেন, তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, সময়মতো ফুল ফোটানো সম্ভব হবে না। কিন্তু উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ করেন। পরে হানকে ছয় মাস লেবার ক্যাম্পে কাটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।


একটি সূত্র ডেইল এনকে’কে বলেছে, উত্তর কোরিয়ায় রোগনিয়ন্ত্রণ বিধির কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছিল, ফলে অবহেলার মুখে পড়ে কিমজঙ্গিলিয়া-কিমিলসুঙ্গিয়া ফুলের গ্রিনহাউজগুলো। কিন্তু এখন হঠাৎ কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানের জন্য সময়মতো ফুল লাগবে।

অনেকে অভিযোগ করেছেন, এসব গ্রিনহাউজে প্রয়োজনমতো জ্বালানি কাঠও সরবরাহ করেনি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার দায়ভার চাপানো হচ্ছে নির্দোষ মালীদের ওপর।

হান ছাড়াও চোই নামে বছর চল্লিশের আরেক ব্যক্তি গ্রিনহাউজের বয়লারের দায়িত্বে ছিলেন। ঠিকভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেননি অভিযোগে তাকে তিন মাস লেবার ক্যাম্পে থাকতে হচ্ছে। কিম নামে আরেক মালীকে প্রতিদিন পার্টি কমিটির কাছে ফুলের অবস্থা সম্পর্কে জানাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে রোজ নিজের নিন্দাও লিখে আনতে হবে তাকে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন