বিজিবির সঙ্গে মাদক কারবারিদের ইঁদুর-বিড়াল প্রতিযোগিতা চলছে

মাদক চোরাকারবারিরা বারবার কৌশল পাল্টানোর কারণে বিজিবির সঙ্গে ইঁদুর-বিড়ালের প্রতিযোগিতা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতস্থ দেশের একমাত্র প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের ৯৭তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম বলেন, আমরা মিয়ানমার সীমান্তে টহল অনেকগুণ বৃদ্ধি করেছি। এখন চায়ের প্যাকেটের ভেতর যে আইসটা, মিয়ানমার থেকে আমরা যে মাছটা আমদানি করি মাছের বরফের সঙ্গে নিয়ে আসা হয়। যেহেতু বরফ আর আইস দেখতে একই রকম। মাদক পাচারকারী দুষ্কৃতিকারীদের সঙ্গে বিজিবি সদস্যদের এটা একটা ইঁদুর-বিড়ালের প্রতিযোগিতার মতো চলছে।
গেল সপ্তাহেও এক চালানে ৫০ কোটি টাকার আইস ধরার কথা উল্লেখ করে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, মাদক পাচার বন্ধে বিজিবির প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। মাদক পাচার আর ব্যবহার বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। দেশের মানুষ সংঘবদ্ধভাবে সহযোগিতা করলে মাদক পাচার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা যাবে।
বিজিবি মহাপরিচালকের প্রায় চার বছর দায়িত্ব পালনকালে বিজিবির সক্ষমতা-অক্ষমতার প্রশ্নে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সক্ষমতা, প্রশিক্ষণে, অপারেশনাল কার্যক্রমে আমরা আকাশ ছুঁতে চাই। অনেক কিছুই করতে চাই আমরা। প্রধানমন্ত্রী সহায়তায় আমরা অনেক দূর এগিয়েছি, আরও এগিয়ে যাব। করোনা প্রাদুর্ভাবে স্বাস্থ্যখাতে সরকারের বেশ অর্থ ব্যয় হচ্ছে। যার কারণে কিছুটাও হলেও অন্যান্য কার্যক্রমে গতি মন্থর হয়েছে। প্রাদুর্ভাব কেটে গেলে আমাদের সক্ষমতা হবে আকাশচুম্বি।
সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়ে মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম বলেন, কাঁটা তার আর ড্রোন উড়িয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতের চেয়ে আমরা সক্ষমতায় জোর দিচ্ছি বেশি। কেননা নিরাপত্তার জন্য আমরা কাঁটা তার লাগালাম, চোরাকারবারিরা কেটে অনুপ্রবেশ করল। তাদের মোকাবিলা করতে আমরা আমাদের নজরদারি এবং সক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছি।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে শুরু হয় দেশের একমাত্র প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের ৯৭তম রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিজিবি মহাপরিচালককে সশ্রদ্ধ সালামের মাধ্যমে শুরু হয় কুচকাওয়াজের আনুষ্ঠানিকতা।
এ সময় বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন বিজিটিসিএন্ডসির কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মসিউর রহমান, ডেপুটি কমান্ড্যান্ট কর্নেল সাহীদুর রহমান ওসমানী। প্যারেড কমান্ডার ছিলেন মেজর মো. সেলিমুদ্দোজা।
এবার বিজিটিসিএন্ডসি এবং চুয়াডাঙ্গা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে ৪৯ নারীসহ ৮৮৫ জন শপথ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সৈনিক হিসেবে বিজিবির সঙ্গে যাত্রা শুরু করেন।
কুচকাওয়াজ শেষে প্রধান অতিথি চৌকস রিক্রুট মিরসরাইয়ের নুরুল হুদা মামুন, শ্রেষ্ঠ নারী সৈনিক নবীনগরের নিপা আকতার, সর্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠ জান্নাতুল রুবিনাকে পুরস্কৃত করেন।
এইচকেআর