ক্ষতিপূরণের জন্য নছিমন চালককে আটকে রেখেছে ইউএনও


ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে চারদিন ধরে এক দরিদ্র নছিমন চালককে আটকে রাখা হয়েছে। ইউএনওর গাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ করার দায়ে এবং ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য তাকে আটকে রাখা হয় বলে স্বীকার করেছেন ইউএনও রুহুল আমিন। তবে তিনি বলেন, চার দিন নয় সর্বমোট আড়াই দিন আটকে রাখতে পারি।
এ ছাড়া আমার কিছু করার ছিল না। দুর্ঘটনায় আমার ব্যবহৃত গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ক্ষতিগ্রস্থ গাড়িটি আসলে কে মেরামত করবে? একজন ইউএনও কতটাকা বেতন পায় বলুন? পাল্টা প্রশ্ন করে রুহুল আমিন বলেন, আমি চাইলে ওইদিন নছিমন চালককে কারাদন্ড দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করতে পারতাম। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করে অফিসে এনে আটকে রেখেছি।
নছিমন চালক কত টাকার মালিক এবং তিনি কিভাবে ক্ষতিপূরণ দিবে প্রশ্ন করা হলে ইউএনও বলেন, তাহলে আমি কেন ক্ষতিপূরণ দেব?
জানা গেছে, রোববার (৩ মে) ভোলা সদর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় থেকে যাচ্ছিলেন চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুর আমিন। এসময়ে ইউএনওর গাড়ি অতিক্রমকালে সদর উপজেলার বাসিন্দা নছিমন চালক আরিফের নছিমনের সাথে ইউএনওর গাড়ির ধাক্কা লাগে। দুর্ঘটনার পর নছিমন চালককে আটক করা হয়।
ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, নছিমন চালককে আটক করে চরফ্যাশন থানায় সোপর্দ করা হয়। তারপর বিবেচনা করে দেখলাম তাতেতো ক্ষতিপূরণ উঠবে না। এরপর আমার অফিসে নিয়ে আসি। এখানে আটকে রেখে ক্ষতিপূরন আদায় করতে চাই। আমি ওর মা-বাবাকে খবর দেওয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু ওর মা-বাবা আসেনি। এখন আমি কি করবো? আমি চেয়েছিলাম যে ক্ষতিপূরণ নিয়ে ওর মা-বাবা আসবে তা আমি তাদেরকেই ফেরত দিব। কিন্তু তার আগেই সাংবাদিকরা এসে সব গোলমাল পাকিয়ে ফেলেছে। তাছাড়া নছিমন চালক একটা নেশাখোর। এজন্য ওর মা-বাবা ওকে নিতে আসে না।
জানা গেছে, ইউএনও অফিস থেকে বন্দী আরিফকে দুপুরে ও রাতে খাবার দেওয়া হয়। বাকি এক বেলা আরিফ নিজের পকেটের টাকায় খাবার কিনে খায়।
আটক আরিফ গণমাধ্যমে বলেন, আমার কিছু নাই যে বিক্রি করে এনে ই্উএনও স্যারকে টাকা দিমু। তারপরও অনেক কষ্টে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে দিতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি তা নিতে রাজি হননি। তিনি বলেছেন, গাড়ির ক্ষতি হয়েছে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। আমাকে এক লাখ টাকা দিতে হবে। বৃহস্পতিবার (৬ মে) দুপুরে এসব কথা বলেন আরিফ।
ভোলা জেলা প্রশাসক তৌফিক -ই-লাহী চৌধুরীকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এইচকেআর
