দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ, ওসিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা


রাজধানীর হাতিরঝিলে অপহরণের পর দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে হাতিরঝিল থানার ওসিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক জুলফিকার হায়াতের আদালতে মামলার আবেদন করেন ভুক্তভোগী নারী। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে নথি পর্যালোচনা শেষে আদেশ পরে দেবেন বলে জানান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পেশকার ইশতিয়ার আলম।
আসামিরা হলেন- হাতিরঝিল থানার ওসি আব্দুর রশিদ, ওসি (তদন্ত) মহিউদ্দিন ফারুক, ওসি (অপারেশন) গোলাম আযম, এসআই শরীফুল, এসআই চয়ন, আলেয়া, কাজী তোফাজ্জল হোসেন, জাভেল হোসেন পাপন, জামাল, রাকিবুল হাসান, তানীম রেজা বাপ্পী, পান্নু হাওলাদার ও ইউসুফ রিপন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে বাবার বাড়িতে থাকছেন ওই নারী। এক বছর আগে তার খালাতো বোনের মাধ্যমে আসামি বাপ্পীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে বাপ্পী তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে তাকে রাজি করান। গত বছরের ২২ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলেয়া, তোফাজ্জল, পাপন, জামাল, রাকিবুল, পান্নু ও রিপনের উপস্থিতিতে বিয়ের নাটক সাজিয়ে বিয়ে পড়ান ও স্বাক্ষর নেন বাপ্পী। পরে তারা ওই নারীর বাবার ভাড়া বাসায় ওঠেন এবং স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে থাকতে শুরু করেন। মাস দুয়েক পর বাপ্পীকে তার সন্দেহ হয়। তখন ওই নারী বিয়ের কাবিননামা চাইলে বাপ্পী তা নিয়ে টালবাহানা করেন। পরে তিনি বুঝতে পারেন যে বাপ্পী তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
মামলায় আরো বলা হয়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি কাবিননামা দেওয়ার কথা বলে ওই নারীকে বাপ্পী নিজের এক আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই আরো পাঁচজন মেয়ে ছিল, যাদের আত্মীয় বলে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে আরো দুজন সেখানে আসেন।
একপর্যায়ে আলিয়ার সহযোগিতায় জাবেল হোসেন পাপন ও মো. জামাল ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। আলিয়া তার ভিডিও ধারণ করেন ও ছবি তোলেন। পরে ওই নারী কৌশলে সেখান থেকে বের হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। সেখান থেকে ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহযোগিতায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই হাসপাতালে ওসিসি বিভাগে ভর্তি হন। পরে তিনি ১৬ ফেব্রুয়ারি হাতিরঝিল থানায় ধর্ষণের অভিযোগ করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি, পরিদর্শক (তদন্ত), ওসি (অপারেশন) থানায় তাকে বসিয়ে রেখে আসামিদের ধরতে অভিযানে বের হন। পরে আসামি আলিয়াসহ আরো কয়েকজন নারী এবং অপর আসামিদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর ওই নারীকে মামলা করতে না করে পুলিশ। তিনি রাজি না হওয়ায় আসামিরা তাকে এক লাখ টাকা দিতে চান। একপর্যায়ে আসামিরা পুলিশকে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে ছাড়া পান। পুলিশ মামলা না নিয়ে কয়েকটি সাদা কাগজে ওই নারীর স্বাক্ষর নেয় এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থানা থেকে বের করে দেয়।
ওইদিন রাত ১টায় বাসায় ফেরার সময় খিলগাঁও এলাকায় পান্নু, রিপন ও পাপনসহ কয়েকজন পথ আটকে তাকে অপহরণের চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় তারা তাকে গুম করার হুমকি দিয়ে যান।
এসএম
