আমরা এক সেকেন্ডের জন্যও হাল ছাড়িনি: জেলেনস্কি

অনলাইনে যুক্ত হয়ে মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার দেশের জনগণ এবং সৈন্যদের সাহসী লড়াইয়ের কথা তুলে ধরে বলেছেন, ‘আমরা এক সেকেন্ডের জন্যও হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবিনি।’ তিনি বলেন, রাজধানী কিয়েভে প্রত্যেকদিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে রাশিয়ান দখলদাররা। কিন্তু তারপরও আমরা হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতে পারিনি।
জেলনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছে এবং গত আট বছর ধরে রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিহত করেছে।
বুধবার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনের ব্যাপারে কথা বলেন জেলেনস্কি। এ সময় তিনি আবারও ইউক্রেনে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান।
ভাষণের শুরুতে কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আইনপ্রণেতাদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেন। একইসঙ্গে তিনি জেলেনস্কির উদ্দেশে বলেন, ‘‘সাহসী নেতৃত্বের জন্য আপনার প্রতি কংগ্রেসের সহকর্মী সদস্যদের ‘মহান শ্রদ্ধা, এবং প্রশংসা’ রয়েছে।’’
রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করার জন্য আমেরিকান আইন প্রণেতাদের আরও কিছু করার আহ্বান জানিয়েছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। কংগ্রেসে দেওয়া ভাষণে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বিশ্বের ‘শান্তির নেতা’ হওয়ার অনুরোধ করেন।
ইউক্রেনে মানুষের মৃত্যু ও রাশিয়ার ধ্বংসযজ্ঞের একটি ভিডিও প্রদর্শন করেন জেলেনস্কি। এই ভিডিও দেখিয়ে কংগ্রেসের সদস্যদের প্রতি তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের আকাশকে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর উৎস বানিয়েছে রাশিয়া। ভিডিও দেখানো শেষে ইউক্রেনের আকাশ বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ভাষণের শেষে বাইডেনের কাছে ইংরেজিতে সরাসরি আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আপনি বিশ্বের নেতা হবেন। বিশ্বের নেতা হওয়া মানে শান্তির নেতা হওয়া।’
এর আগেও কয়েকবার ইউক্রেনে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করতে পশ্চিমাদের প্রতি জেলেনস্কি আহ্বান জানালেও ন্যাটো, জো বাইডেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক আইনপ্রণেতা তা প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ হিসাবে তারা বলেন, ইউক্রেনে নো ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হলে তা পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাশিয়ার সাথে সরাসরি পশ্চিমের সংঘাত সৃষ্টি করবে।
এছাড়া হোয়াইট হাউস এখন পর্যন্ত রাশিয়ার তৈরি মিগ যুদ্ধবিমানগুলো ইউক্রেনে পাঠানোর প্রস্তাবে সমর্থন জানায়নি। যদিও কংগ্রেসে প্রস্তাবের পক্ষে কিছু আইনপ্রণেতার সমর্থন রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।
এসএম