রাশিয়ার রাষ্ট্রপরিচালিত টিভিতে পদত্যাগের হিড়িক

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ওয়ান এ সরাসরি খবর চলার মধ্যে ইউক্রেইন যুদ্ধবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে উপস্থিত হয়ে নারী সাংবাদিক মারিনা ওভসিয়ান্নিকোভার প্রতিবাদের পরপরই দেশটির কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রপরিচালত টিভি চ্যানেলগুলোতে সাংবাদিকদের একের পর এক পদত্যাগের ঘটনা সামনে আসতে শুরু করেছে।
ওভসিয়ান্নিকোভা গত সোমবার সন্ধ্যায় লাইভ খবরের মধ্যে টেলিভিশনের পর্দায় সংবাদ পাঠিকার পেছনে দাঁড়িয়ে ওই প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। টিভি পর্দায় তার প্ল্যাকার্ড কয়েক সেকেন্ড স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। তাতে লেখা ছিল, “যুদ্ধ নয়, যুদ্ধ বন্ধ করুন, প্রপাগান্ডায় বিশ্বাস করবেন না, তারা এখানে আপনার সামনে মিথ্যা বলছেন।”
তার এই প্রতিবাদের কয়েকঘণ্টা পরই তিন টিভি সাংবাদিকের পদত্যাগের ঘটনা সামনে এসেছে। রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত চ্যানেলগুলোর ক্রেমলিনের লাইনেই চলার নিয়ম। তাহলে ইউক্রেইনে যুদ্ধের প্রতিবাদে পদত্যাগ করছেন কারা?
বিবিসি জানায়, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ওয়ানে সাংবাদিক ওভসিয়ান্নিকোভার সহকর্মী ইউরোপ সংবাদদাতা হিসাবে কাজ করা ঝান্না আগালাকোভা চাকরি ছেড়েছেন। আরেক রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এনটিভি’রও দুই সাংবাদিক কাজ ছেড়ে চলে গেছেন। এই দুইজনের একজন লিলিয়া গিলডেইয়েভা ২০০৬ সাল থেকে এনটিভিতে সংবাদ উপস্থাপিকা ছিলেন। আর অপরজন, ভাদিম গ্লাসকার প্রায় ৩০ বছর ধরে এনটিভি-তে কাজ করে আসছিলেন।
অল-রাশিয়া রাষ্ট্রীয় টিভি গ্রুপ ভিজিটিআরকে- এর সাংবাদিকরাও পদত্যাগের পথে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। খ্যাতনামা টিভি হোস্ট সের্গেই ব্রিলেভও তার পদত্যাগের খবর জানিয়েছেন। ওদিকে, রুশ টিভি নেটওয়ার্ক ‘আরটি’- এর সবচেয়ে উচ্চপদস্থ সাংবাদিক মারিয়া বারোনোভাও পদত্যাগ করেছেন। তিনি আরটি’র প্রধান সম্পাদক ছিলেন।
বিবিসি-কে এ মাসে মারিয়া বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন এরই মধ্যে রাশিয়ার ভাবমূর্তি ধ্বংস করে ফেলেছেন। আর অর্থনীতিও মরে গেছে। কেবল মারিয়াই নয়, আরটি’র আরও অনেক সাংবাদিকই পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যে রুশ নন এমন সাংবাদিকও আছেন।
আরটি’র ফরাসি এক উপস্থাপক বলেছেন, তিনি তার টিভি শো’ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। কারণ রাশিয়ার সঙ্গে প্রকাশ্যেই ফ্রান্সের সংঘাত আছে। আর ‘নিজ দেশের প্রতি আনুগত্যের কারণে’ তিনি আরটি-তে তার প্রোগ্রাম আর উপস্থাপনা করতে পারছেন না।
এইচকেআর