পাকিস্তানকে মদিনা সনদের ভিত্তিতে গড়ে তোলা দরকার ছিল
পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব তোলার এক দিন আগে রাজধানী ইসলামাবাদে এক 'ঐতিহাসিক' সমাবেশের মধ্য দিয়ে নিজের শক্তি প্রদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
রোববার ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) 'কল্যাণের সঙ্গে থাকুন' শিরোনামে ইসলামাবাদের প্যারেড গ্রাউন্ডে ওই সমাবেশ করেছে। দুপুর ৩টা থেকে সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও দলীয় প্রধানের ডাকে সাড়া দিয়ে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলীয় কর্মীরা রাজধানীতে জড়ো হন। পিটিআই দাবি করেছে- সমাবেশে দশ লাখ মানুষ হয়েছিল। বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা প্রস্তাব জাতীয় সংসদে উত্থাপনের এক দিন আগে এমন সমাবেশকে ইমরানের দলের শক্তি প্রদর্শনের মহড়া হিসেবে দেখছেন দেশটির রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিকেল ৫টায় হেলিকপ্টারে করে প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছান। সমাবেশ স্থলে পৌঁছেই কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন তিনি। এ সময় পাকিস্তানের ইতিহাসে দিনটিকে একটি 'ঐতিহাসিক দিন' হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, 'বিদেশি অর্থ ব্যবহার করে পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে। দুর্নীতির মামলা বন্ধে সরকারকে 'ব্ল্যাকমেইল' করার লক্ষ্যে তার বিরুদ্ধে বিরোধীরা অনাস্থার মতো পদক্ষেপ নিতে উঠেপড়ে লেগেছে। এই অপরাধীদের লুটপাট ও লুণ্ঠনের দিন শেষ হয়েছে।' বিরোধীদের দিকে ইঙ্গিত করে ইমরান বলেন, তারা প্রকাশ্যে আইনপ্রণেতাদের কিনছে। এ সময় পাকিস্তানকে মদিনা সনদের ওপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা দরকার ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা প্রস্তাব আজ সোমবার জাতীয় সংসদে তোলার কথা রয়েছে। প্রস্তাবটি গত শুক্রবার পার্লামেন্টে ওঠার কথা থাকলেও স্পিকার অধিবেশন মুলতবি করায় তা পিছিয়ে যায়। সেটি আজ অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে এবং এর ওপর সাত দিন বিতর্কের পর চূড়ান্ত ভোটাভুটি হবে। তবে ভোটাভুটির আগে পিটিআইর অন্তত ৫০ জন মন্ত্রীকে রাজনৈতিক দৃশ্যপটে দেখা না যাওয়ায় এ নিয়ে গুঞ্জন চলছে। বিরোধী দলগুলো ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরাতে তৎপর হওয়ার পর থেকে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের এই মন্ত্রীদের প্রকাশ্যে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এখনও ভালো সমর্থন পাচ্ছেন ইমরান খান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি, তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী, জ্বালানি মন্ত্রী হাম্মাদ আজহার, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পারভেজ খাত্তাক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ বেশ জোরেশোরে ইমরান খানের পক্ষে বক্তব্য দিয়ে আসছেন।
সবকিছুই প্রমাণিত হবে জাতীয় সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির দিন। ইমরান খান সরকারের জোটে থাকা তিনটি বড় শরিক দল ইঙ্গিত দিয়েছে, পার্লামেন্টের অনাস্থা ভোটে তারা বিরোধী দলের পক্ষে থাকতে পারে, যা ইমরান সরকারের পতন ঘটাতে যথেষ্ট।
এমইউআর