মা আমাকে বিষ দাও

‘মা আমাকে বিষ দাও, আমি আর ব্যথার যন্ত্রণা সইতে পারছি না’—এভাবেই মায়ের কাছে আকুতি জানিয়েছেন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়া হতভাগা রাশি আক্তার (১৫)। রাশির দুটি কিডনিই নষ্ট। চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু পথযাত্রী এই কিশোরী চিকিৎসা নিয়ে বাঁচতে চায়।
সে উপজেলার বালালী গ্রামের ভ্যানচালক মোলামিন খানের মেয়ে। ২০২১ সালে বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করলেও কলেজে আর ভর্তি হতে পারেনি রাশি আক্তার।
গত এক বছর হল তার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। সামান্য ভিটেমাটি ছাড়া যেটুকু জমি ও গবাদিপশু ছিল তা সব বিক্রি করে এতোদিন চিকিৎসার খরচ চালিয়েছেন করছেন রাশির ভ্যান চালক বাবা মোলামিন খান। বর্তমানে টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না। ঋণ করে একদিকে চিকিৎসা খরচ অন্যদিকে সাংসারিক খরচ চালাতে গিয়ে এখন দিশেহারা তিনি।
‘সপ্তাহে দুদিন দিতে হয় এ পজেটিভ রক্ত। সেখানেও প্রতি যাতায়তসহ সপ্তাহে খরচ হয় ২৫ হাজার টাকা। এছাড়া একদিন পর পর ডায়ালাইসিস করাতে হয়। সেখানেও সপ্তাহে খরচ করতে হয় ৫ হাজার টাকা। এতোদিন চিকিৎসা করানো হলেও খরচ ব্যয়বহুল হওয়ায় টাকার অভাবে এখন আর উন্নত চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। বর্তমানে মেয়েটি বাসাতেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
মেয়েটির মা রিপনা বেগম বলেন, গত কয়েক দিন যাবত আমার মেয়ে আর বিছানা থেকে উঠতে পারছে না। বার বার বলছে মা আমি আর ব্যথা সইতে পারছি না। আমাকে বাজার থেকে বিষ এনে দাও আমি আর বাচঁতে চাই না।
এদিকে মেয়েটির বাবা মোলামিন খান বলেন, আমি ভ্যান চালক কোনো দিন কাজ পাই আবার কোনো দিন পাই না। আমার হালের একটি ষাঁড় ও কিছু জমি ছিল তা সব বিক্রি করেছি। বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা আমার মেয়ের চিকিৎসার পিছনে ব্যয় করেছি। এখন আমি আর পারছি না। মেয়েটি বাড়িতে থেকেই দিন দিন দুর্বল হয়েছে যাচ্ছে। আমার মেয়েকে বাচাঁতে অনেক টাকার প্রয়োজন তাই উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও দেশে বিদেশে বিত্তশালীরা যদি আমার মেয়ের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করেন তাহলে হয়তো তাকে বাঁচানো সম্ভব হবে।
আরএইচ
