বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে আবস্থান


গাজীপুরের শ্রীপুরে এক কলেজ ছাত্রী বিয়ের দাবিতে তার প্রেমিক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে ১২ দিন ধরে অবস্থান করার পর প্রেমিকাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও মারধর করে অচেতন অবস্থায় ঘরের বাহিরে ফেলে রাখার অভিযোগ করেছেন কলেজ ছাত্রীর পরিবার। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের প্রেমিক পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্বজনদের সহায়তায় ওই তরুণীকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
প্রেমিকা তামান্না পালোয়ান উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের ধামলই গ্রামের জসিমউদ্দিন পালোয়ানের মেয়ে।
সে ঠাকুরগাঁও টেকনিক্যাল কলেজের ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনার্স (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। প্রেমিক জাহাঙ্গীর আলম একই ইউনিয়নের পাশের সোনাব গ্রামের মোহাম্মদ ছাত্তার ঢালীর ছেলে। সে বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে কর্মরত রয়েছেন।
ভিকটিমের বোন জানান, অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপাড়া অবস্থায় জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ওই কলেজ ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক হয়। প্রায় পাঁচ বছর তাদের মধ্যে প্রেম চলতে থাকে। গত ঈদুল ফিতরের (রমজানের ঈদ) ছুটিতে জাহাঙ্গীর বাড়িতে এসেও তরুণীর সঙ্গে দেখা করে। ছুটি শেষ হওয়ার আগেই বাড়িতে থাকা অবস্থায় জাহাঙ্গীর হঠাৎ করে তার প্রেমিকার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে কোনো উপায় না পেয়ে শুক্রবার (৬ মে) বিকেলে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের প্রেমিক পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয় ওই তরুণী। প্রেমিকার উপস্থিতি টের পেয়ে প্রেমিক জাহাঙ্গীর বাড়ি থেকে পালিয়ে তার কর্মস্থল চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে চলে যায়।
কলেজ ছাত্রী তামান্না জানান, দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে জাহাঙ্গীর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমি তাকে বিয়ের কথা বললে সে হঠাৎ করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তাই বাধ্য হয়ে বিয়ের দাবিতে আমি তার বাড়িতে চলে আসি। আজ ১২ দিন জাহাঙ্গীরের বাড়ির লোকজন আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করছে। তারা আমাকে ঠিকমতো খাবার খেতে না দেয়ায় আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। স্থানীয় ধামলই বাজারের ফার্মেসি মালিক কামাল হোসেন ও জাহাঙ্গীরের ফুফু পরিচয়ে দুই নারী মঙ্গলবার (১৭ মে) বিকেলে আমাকে ঘর থেকে অচেতন অবস্থায় বের করে বাড়ির উঠানে ফেলে রাখে।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, তামান্নার সঙ্গে ফেসবুকে আমার পরিচয়। বিভিন্ন সময় তার সঙ্গে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আমার যোগাযোগ হতো। এখন বিয়ের দাবিতে সে আমার বাড়িতে অবস্থান করেছে।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এস আই) আরশাদ হোসেন জানান, ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তরুণীকে ঘরের বাহিরে পড়ে থাকতে দেখি। পরে তার স্বজনদের সহযোগিতায় তরুণীকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এমইউআর
