ফুটবল খেলা নিয়ে হামলায় আহত ১৫ শিশু


গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গোল্ডকাপ ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুনন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপের প্রাথমিক পর্যায়ের খেলায় এক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১৫ শিশু শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের স্থানীয় একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
বুধবার (৮ জুন) বিকেলে আড়াইটার দিকে কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এঘটনা ঘটে। হাড়িয়াদি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সিংহশ্রী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ফুটবল খেলা শেষে বালক ও বালিকা দলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কটুকথা বলা নিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হাড়িয়াদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালমা আক্তার বলেন, বুধবার বেলা ১২টায় তার বিদ্যালয়ের বালক ও বালিকা শিক্ষার্থীদের সাথে সিংহশ্রী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বালক ও বালিকা শিক্ষার্থীদের সাথে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রাথমিক পর্যায়ের খেলার আয়োজন ছিল। আমরা আমাদের খেলোয়াড় শিক্ষার্থীদের নিয়ে সিংহশ্রী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাই। আমাদের বিদ্যালয়ের বালিকা শিক্ষার্থীদের সাথে সিংহশ্রী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বালিকা দল খেলায় হেরে যায় এবং হাড়িয়াদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বালক দল সিংহশ্রী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলায় জিতে যায়, অর্থাৎ খেলায় তাদের বিদ্যালয়ের বালিকা দল হারলেও বালক দল জয়ী হয়। খেলা শেষে ড্রেসিং রুমে হাড়িয়াদী বিদ্যালয়ের এক (বালক) শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দেয় সিংহশ্রী বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে সিংহশ্রী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হাড়িয়াদী বিদ্যালয়ের বালিকা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। এতে আমাদের বিদ্যালয়ের প্রায় ১৫জন শিক্ষার্থী আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী শ্রীপুরের বরমী নিউ লাইফ এন্ড পপুলার হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহতরা হলো, পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সন্দিতা (১০), মারিয়া (১১) রাবেয়া (১০), ইয়াছমিন (১০), নুসরাত (১০), সাবিহা (১০), আরিফা (১০) ও শায়ন (১১) সহ ১৫জন।
শিক্ষার্থী ইয়াছমিনের মা হালিমা খাতুন বলেন, হামলায় আমার মেয়ের পায়ে ব্যাথা পেয়েছে। তাকে চিকিৎসক এক্সরে করতে বলেছে। হাঁটাচলা করতে তার কষ্ট হচ্ছে।
আহত অপর শিক্ষার্থী মারিয়ার মা ফাহিমা আক্তার বলেন, হামলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই শুধু জড়িত ছিল না, সিংহশ্রী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও হামলায় মদদ দিয়েছে।
এ বিষয়ে সিংহশ্রী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি একটি প্রশিক্ষণে কাপাসিয়া উপজেলাতে ছিলাম। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার পারভেজ খোকন আমাকে মুঠোফোনে হামলার বিষয়টি জানান। তাৎক্ষণিকভাবে আমি বিদ্যালয়ে আসি। কিন্তু আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মোটেও সত্য নয়। বরং হাড়িয়াদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক দপ্তরি আমাদের এক শিক্ষার্থীকে চড়-থাপ্পড় মেরেছে।
কাপাসিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আনছার উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে শিক্ষক ও কর্মকর্তারা মিলে আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পাঠানো হলেও দুইজনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, শিশু শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। পুরো বিষয়ে খবর নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমইউআর
