ইয়াসের আঘাতে দেশে ৬ জনের প্রাণহানি


ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে ভারতে দু’জন এবং বাংলাদেশে ৬ জন মারা গেছেন। বাংলাদেশের উপকূলীয় ১৪ জেলার বাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ফসলের। ভারতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিশাল আকারের এই ঘূর্ণিঝড় সরাসরি আঘাত না করলেও এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি পূর্ণিমা ও পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ ছিল। ফলে ভরাকটালের সঙ্গে বায়ুতাড়িত জোয়ার জলোচ্ছ্বাস তৈরি করে। এই জলোচ্ছ্বাসের ধাক্কায় খুলনা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত উপকূলীয় বিভিন্ন জেলার নিম্নাঞ্চল ভেসে যায়। এতে বেড়িবাঁধগুলো ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। শত শত গ্রাম তলিয়ে যায়। ভেসে গেছে কয়েক হাজার ঘেরের মাছ। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। নষ্ট হয়েছে উঠতি ফসল।
জোয়ারের পানিতে ডুবে ও বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে পড়ে ৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খুলনার কয়রা ও বাগেরহাটের মোংলা। মোট কত ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন অঞ্চল সেই তথ্য এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
তবে প্রত্যক্ষদশীরা জানিয়েছেন, সুন্দরবনে গত বছরের ঘূর্ণিঝড় আম্পানের চেয়েও এক ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস ছিল। আর আবহাওয়া দফতর থেকে পূর্বাভাস ছিল ৩-৬ ফুট উঁচু জোয়ারে ভাসতে পারে উপকূলীয় ১৪ জেলার নিম্নাঞ্চল। বিভিন্ন স্থানে আম-লিচুসহ মৌসুমি ফল ঝরে পড়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ২৪টি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বাংলাদেশে আঘাত করেনি। এটি ভারতের ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ এখন সম্পূর্ণরূপে এর প্রভাবমুক্ত। তবে পূর্ণিমার কারণে জোয়ারের পানি বেশি ছিল। এ কারণে অতি জোয়ার বা জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় ৯ জেলার ২৭ উপজেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভোলার লালমোহনে গাছচাপায় একজন মারা গেছেন। উপকূলীয় ২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে।
এমবি
