ঢাকা রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ছবি: সংগৃহীত 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে উদার দেশ উল্লেখ করে অবকাঠামো, জ্বালানি ও পরিবহন খাতে বিনিয়োগে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে দিল্লি সফরের তৃতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রীর আবাসস্থল হোটেল ‘আইটিসি মাইয়্যুরা’র বলরুমে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) যৌথভাবে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়িক অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের অবকাঠামো, প্রকল্প, শিল্পকারখানা, জ্বালানি এবং পরিবহন খাতে সম্ভাব্য বিনিয়োগ বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করবো। ভারতীয় বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কম সময়ে, সাশ্রয়ী ব্যয় এবং স্বল্পসম্পদে উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয়ের নিশ্চয়তাসহ বাই-ব্যাক ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশে শিল্প স্থাপন করতে পারেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে এ অঞ্চলের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে বিস্তৃত সুযোগ-সুবিধা, আকর্ষণীয় প্রণোদনা নীতি এবং ধারাবাহিক সংস্কার প্রক্রিয়ার সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে শিল্প, কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি এবং বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বিনিয়োগ ও দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ২৮টি হাইটেক পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে।

সরকারপ্রধান বলেন, ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য মোংলা এবং মিরসরাইয়ে দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা হচ্ছে। আমি আজ এখানে উপস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেখানে বিনিয়োগ করার জন্য অনুরোধ করবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের সদিচ্ছাকে কাজে লাগানোর পথকে আরও প্রশস্ত করবে এবং এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনবে। ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা তাদের পণ্য শুধু ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতেই নয়, নেপাল, ভুটান এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও রপ্তানি করতে সক্ষম হবেন।

তিনি বলেন, ভারতীয় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের বাংলাদেশের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার এবং এর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বল্প খরচ এবং বিশাল ভোক্তা ভিত্তির সুবিধা নেওয়ার সময় এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন। সফরের তৃতীয় দিনে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করেন। একই দিন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।

এর আগে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানান নরেন্দ্র মোদি। আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়া হয় গার্ড অব অনার। এ সময় মোদি সবার সঙ্গে শেখ হাসিনাকে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর ফটোসেশনে যোগ দেন দুই প্রধানমন্ত্রী।


এরপর রাজঘাটে ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। এ সময় ভারতের জাতির পিতার স্মৃতিসৌধে রাখা দর্শনার্থী বইয়েও স্বাক্ষর করেন তিনি। পরে স্মৃতিসৌধের সচিব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে একটি উপহার দেন।

দুপুরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে তাদের উপস্থিতিতে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে ৭ সমঝোতা স্মারক সই হয়।

বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তিস্তা নিয়ে আশা প্রকাশ করে বলেন, তিস্তার মতো দুদেশের অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের ইস্যুগুলো আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান হবে।

ওইদিন বিকেলে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় দুদেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ  সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার বিষয়ে কথা বলেন তারা।

এ সময় ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। আগামী দিনগুলোতে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় উন্নীত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী দুই দেশ যেভাবে উদ্‌যাপন করেছে তা সত্যিই অনন্য।

আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার আগে রাজস্থানের খাজা গরিব নওয়াজ দরগাহ শরিফ, আজমির (আজমির শরিফ দরগাহ) জিয়ারত করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে সর্বশেষ ২০১৯ সালে ভারত সফর করেন শেখ হাসিনা।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন