ঢাকা বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫

Motobad news
সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষিত

মনপুরায় মেঘনায় অবাধে মা ইলিশ নিধনের উৎসব চলছে

মনপুরায় মেঘনায় অবাধে মা ইলিশ নিধনের উৎসব চলছে
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ভোলার মনপুরার সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রভাবশালীর মহলের ইন্ধনে অসাধু জেলেরা রাতের আঁধারে মেঘনায় অবাধে মা ইলিশ শিকার করছে। স্থানীয় প্রশাসন নিরব থাকার কারনে ওই প্রভাবশালী মহলটি জেলেদের দিয়ে মেঘনায় মা ইলিশ শিকার করায় বলে অভিযোগ ইলিশ জেলেদের। 

এভাবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মেঘনায় মা ইলিশ শিকার অব্যাহত থাকলে ইলিশের উৎপাদন ও বংশ বিস্তার ব্যাহত হবে আশংকা করছেন ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান।

তিনি জানান, মা ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য সরকার ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর ২২ দিন ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ করে। এই ভরা পূর্ণীমার জো’তে সাগর থেকে জাঁকে জাঁকে ‘মা’ ইলিশ মেঘনায় এসে ডিম ছাড়ে। এই সময় মা ইলিশ শিকার করলে ইলিশের বংশ বিস্তার রোধ সহ উৎপাদন কমে যাবে। এছাড়াও তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে ২২ দিন সরকারি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে জেলেরা যাতে মা ইলিশ শিকার করতে না পারে সেই ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ করেন।

জেলেদের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের পূর্বপাশ মেঘনায় জংলারখাল এলাকায় অহিদ মাঝি ও মিরাজ মাঝি রাতের বেলায় অবাধে ইলিশ শিকার করছেন। এছাড়াও একই ইউনিয়নের আনছার চেয়ারম্যান হালটের মাথায় বাবুল মাঝি, ফরিদ মাঝি ও মোসলেহউদ্দিন মাঝি ইলিশ শিকারে যায়। এছাড়াও নাইবেরহাট, সূর্যমূখী, কাউয়ারটেক ও লতাখালী এলাকায় একাধিক মাঝি রাতের আধাঁরে ইলিশ শিকার করে। এরা সবাই স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নদীতে যায় বলে জেলেরা নিশ্চিত করেন।

এদের মধ্যে আনছার চেয়ারম্যান হালটের মাথায় বাবুল মাঝি এই প্রতিবেদকের কাছে জানান, তিনি পরপর ৩ দিন রাতের বেলায় মেঘনায় ইলিশ শিকারে যায়। ৩ দিনই নদীতে অভিযানে থাকা সদস্যদের হাতে আটক হয়। কিন্তু ৩ দফা ৬০ হাজার টাকা দিলে তারা ছেড়ে দেয়। অভিযানে সদস্যরা যাওয়ার সময় ধৃত ইলিশ নিয়ে যায়। যার ভিডিও রেকর্ড এই প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।

সরেজমিনে গত কয়েকদিন মেঘনার জংলারখাল ঘাট, আনছার চেয়ারম্যান ঘাট, কাউয়ারটেক ঘাট, সূর্যমুখী ও লতাখালী ঘাট রাতে গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসনকে ম্যানেজ করা জেলারা ঘাট থেকে নৌকা ছেড়ে মেঘনায় অবাধে মাছ শিকার করছে। সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ২ টা পর্যন্ত ৭ ঘন্টা অবস্থান করে উপজেলা মৎস্য অফিস ও কোস্টগার্ডের কোন টহল টীম নজরে আসেনি। জেলেররা রাতে বেলায় আলো নিভিয়ে দুই দফা জাল ফেলে মাছ শিকার করছে। এই সমস্ত ঘাট এলাকায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ইলিশ শিকার করে বলে কোন টহল টীম আসে না বলে অভিযোগ করেন ইলিশ জেলেরা।

এই ব্যাপারে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে মনপুরা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন জানান, দিনে-রাতে মেঘনায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। মনপুরার চারপাশ মেঘনা নদী থাকায় ও জনবল সংকটের কারনে এক স্থানে অভিযান দিলে অন্য স্থান অরক্ষিত থাকে। এই ফাঁকে কিছু হতে পারে। তবে সবাইকে সচেতন হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।

এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশিষ কুমার জানান, ট্রেনিং শেষে শুক্রবার মনপুরা এসেছি। মৎস্য অভিযানে কোন শৈথিল্য বরদাস্ত করা হবে না। কঠোরভাবে অভিযান পরিচালনা হবে।


 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন