ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম
  • ‘মব জাস্টিস’ মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে : তারেক রহমান বৃহস্পতিবার শুরু এইচএসসি পরীক্ষা, অংশ নিচ্ছে ১২ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী হাসিনার সেই ‘৪০০ কোটি টাকার’ পিয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট-সঞ্চয়পত্র ফ্রিজ একজন ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না, একমত বিএনপি পৃথিবীর সর্বনাশের জন্য আমরা আসামি : প্রধান উপদেষ্টা আওয়ামী লীগ আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই: ফয়জুল করীম আইএমএফের অর্থছাড়: ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালো রিজার্ভ বাকেরগঞ্জের কারখানা নদীতে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, আতঙ্কে গ্রাম ছাড়চ্ছেন মানুষ পন্টুনের ধাক্কায় ট্রলার থেকে ছিটকে নদীতে, জেলে নিখোঁজ
  • অবৈধ কর্মকান্ডে বৈধতা দিচ্ছে রূপাতলী হাউজিং কর্তৃপক্ষ

    অবৈধ কর্মকান্ডে বৈধতা দিচ্ছে রূপাতলী হাউজিং কর্তৃপক্ষ
    রুপাতলী হাউজিং । ছবি: সংগৃহীত
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    দীর্ঘদিনেও নগরীর রূপাতলী হাউজিং এলাকায় একের পর এক গড়ে ওঠা অবৈধ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। ফলে সরকারের সকল নিয়মকানুন তোয়াক্কা না করে অবৈধ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে ব্যবসা পরিচালনা করছেন ভবন মালিকরা।

    অথচ বরাদ্দ প্রাপ্তির নীতিমালা অনুযায়ী কোন গ্রাহক তাদের নির্মিত স্থাপনায় কোন ধরণের বাণিজ্যিক স্থাপনা কিংবা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করতে পারবেন না। বিষয়টি মনিটরিংয়ের জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের একজন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের একটি কমিটিকে নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। এতে মাসোহারার বিনিময়ে অবৈধ কর্মকান্ডকে বৈধতা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। 

    জানাগেছে, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে ৪৭০টি আবাসিক প্লট নিয়ে বিসিসির ২৪ নং ওয়ার্ডে গড়ে তোলা হয় ‘রূপাতলী হাউজিং এস্টেট’। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের মতে, এই হাউজিংটিতে বর্তমানে ৪৫টি অবৈধ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু তাদের তালিকা চেয়েও দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। 

    এর মধ্যে কাঁচা বাজার, স্কুল ও কলেজ, মাদ্রাসা, কিন্ডার গার্ডেন, এনজিও, হাসপাতাল, আবাসিক হোটেল, আসবাবপত্রের শো-রুম, বিউটি পার্লার, ফ্যাশন হাউজ, ইলেকট্রিক শপ, হার্ডওয়ার, স্যানিটারি, খাবার হোটেল, স্টুডিও, কম্পিউটার শো-রুম, ফোন-ফ্যাক্স, মোবাইল শো-রুম, গার্মেন্টস শো-রুম, জুতার শো-রুম, অটোমোবাইল মেশিনারি শো-রুম, স্টেশনারি, মুদি দোকানসহ কয়েক শ’ অবৈধ দোকান রয়েছে। 

    এমনকি এস্টেটের প্রধান প্রবেশ গেটটিও ব্যবহৃত হচ্ছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড হিসেবে। আর এগুলো বরাদ্দ দিয়ে মালিকপক্ষ জামানত হিসেবে আদায় করছে কোটি কোটি টাকা যা সম্পূর্ণ আইন বর্হিভূত। আর এ সকল বাণিজ্যিক স্থাপনায় ব্যবহৃত বিদ্যুত বিল পরিশোধ করছেন আবাসিক হিসেবে। নিয়ম অনুযায়ী হাউজিং এলাকায় সরকারীভাবে বাজারের জন্য একটি স্থান বরাদ্দ থাকলেও সেখানে কোন স্থাপনা গড়ে উঠেনি। ভাসমান ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে সেখানে বাজার বসিয়েছে। আর এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদ্যুত সংযোগের মাধ্যমে বাণিজ্যিককে আবাসিক বিলে রূপান্তরিত করে দুই একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে মাসিক তিন থেকে পাঁচ শ’ টাকা করে উৎকোচ আদায় করার অভিযোগ রয়েছে বিদ্যুত বিতরণ বিভাগের দায়িত্বরত লাইন সাহায্যকারীর বিরুদ্ধে। তবে বিদ্যুত বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান ওজোপাটিকোর নিবার্হী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন, রূপাতলী হাউজিং এস্টেটে বাণিজ্যিক সংযোগ দেয়ার কোন সুযোগ নেই। যারা অবৈধভাবে আবাসিক মিটারের মাধ্যমে বাণিজ্যিক সংযোগ ব্যবহার করছে সুনিদিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    রূপাতলী হাউজিং এস্টেট এ অবস্থিত হাওলাদার মার্কেটের মালিক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি জমি কিনে মার্কেট করেছি। আইন অনুযায়ী আপনি এখানে মার্কেট করতে পারেন কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি দ্বিতীয় পার্টি। আমার জন্য ওই আইন প্রযোজ্য নয়। 

    তবে বিষয়টি সঠিক নয় দাবি করে রূপাতলী হাউজিং এস্টেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয় হোক কিংবা তৃতীয় হোক, এখানে সবার ক্ষেত্রে একই আইন প্রযোজ্য। 

    তিনি আরও বলেন, আমরা রূপাতলী হাউজিং এস্টেটে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণকারীদের নোটিশ দিয়েছি। কিন্তু তাঁরা বিষয়টি কর্ণপাত করছে না। তাই প্রতিবছর এ সব অবৈধ বাণিজ্যক প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকে নির্দেশনা আসলেই এসকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

    রূপাতলী হাউজিং এস্টেট কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, এখানে বসবাসকারী কোন ব্যক্তি কোন ধরণের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না। তাঁর পরেও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা আমাদের অনুরোধ এবং মৌখিক নির্দেশকে অমান্য করে একের পর এক বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি, তাঁরা যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পূর্বের অবস্থা ফিরিয়ে আনেন। 

    ১৯৮০ সালে হাউজিং এলাকায় ৪৫ একর জমিতে ৪৭১টি প্লট বরাদ্দকালে হাউজিংয়ের বাসিন্দাদের জন্য ১২তলা মার্কেট নির্মাণের জন্য একপাশে জমি বরাদ্দ রেখে নকশা করা হয়। এর মধ্যে জমির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে জেলা পরিষদ থেকে ছয় শতক জমির ওপর ১৫টি স্টল নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়। নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকে হাউজিংয়ের বাসিন্দারা লিখিত এবং মৌখিকভাবে জেলা পরিষদকে বিষয়টি অবহিত করলেও তাঁরা তাতে কর্ণপাত করেনি। বরং ক্ষমতাসীন দলের ওই ঠিকাদার প্রভাব খাটিয়ে ১২ শতক জমি দখলে নিয়ে ১৪০ ফুটের স্থলে ৩ শ’ ফুট জমিতে ৫৮ টি স্টল নির্মাণ করেন। পরে কাজ বন্ধ করতে না পেরে হাউজিংয়ের বাসিন্দা জনৈক আবুল কালাম উচ্চাদালতে রিট করেন। এরপর ওই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজাউল হক এবং বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চ মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। 


    টিইউ
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ