ঢাকা রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

Motobad news
কমানোর নির্দেশনা এলে নানা অজুহাত

ঘোষণার পর মুহূর্তেই দাম বাড়ে এলপিজির

ঘোষণার পর মুহূর্তেই দাম বাড়ে এলপিজির
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

গত (রোববার) প্রতি ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১২৮৪ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এরপর ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়তে সময় নেয়নি মোটেও। ঘোষণার পর পরই ১২৮৪ টাকার পরিবর্তে সব সময়ের মত নানা অজুহাতে ১৪০০-১৫০০ টাকায় গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার বিক্রি শুরু করে বিক্রেতারা।
এর আগে আগস্টে এই দাম ছিল ১১৪০ টাকা। বরিশালে যা বিক্রি হতো ১২৫০ থেকে ১৩০০ টাকা। (কোম্পানি ভেদে দাম কমবেশি হয়) কিন্তু এই দামে কখনোই গ্যাস বিক্রি হয় না বরিশালের বাজারে।

মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর চৌমাথা টিটিসি এলাকায় গ্যাস কিনতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করা মোজাম্মেল হোসেন প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, মাস শেষে ১৪,৫০০ টাকা বেতন পাই। বাসাভাড়া, নিজের যাতাযাত খরচে অর্ধেক টাকা চলে যায়। বাকি টাকা দিয়ে বাজার করবো কিভাবে? রাত পোহালেই বেড়ে যাচ্ছে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম। এখন আবার এলপিজির দাম বেড়ে যাওয়ায় আরেক চিন্তায় পরে গেছি।

এমনই আক্ষেপ করে তিনি আরো বলেন, বেতন বাড়ে না, অথচ পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছেই। এখন পরিবার নিয়ে কীভাবে বেঁচে থাকবো। তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

শুধু মোজাম্মেল হোসেনই নয়, নগরীর বটতলা এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ সুমি আক্তারও একই আক্ষেপ করেন। তিনি বলেন, গত কয়েক মাস স্বামী অসুস্থ। বাসা ভাড়ার টাকা দিয়ে স্বামীর চিকিৎসা খরচ, দুই সন্তান নিয়ে কোন রকম দিনযাপন করছি। এর মধ্যে প্রতিদিন বাজারে গিয়েই শুনি একের পর এক নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে।

শুনেছি সরকার দুইদিন আগে গৃহস্থলিতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ১৪৪ টাকা বাড়ি ১২৮৪ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু গতকাল সকালে বটতলা বাজারে খুচরা দোকান থেকে  ১২ কেজির এলপিজি ১৪০০ টাকা কিনতে হয়েছে। সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের কাছে বাড়তি দামের কথা জিজ্ঞাসা করলে তাদের সাফ কথা- ডিলারদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেন।  
গৃহবধূ ক্ষোভের সুরে বলেন, এভাবে প্রতিটি পণ্যে দাম বাড়তে থাকলে পরিবার নিয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় থাকবে না।
সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা যায়, পেট্রোম্যাক্স, ফাইবার, টোটাল, নাফস, যমুনা, দুবাই বাংলা, ফ্রেশ, জেএমআই, বেক্সিমকো, সেনা ১২ কেজি গ্যাসসিলিন্ডার পাইকারি সরকারি নির্ধারিত দামের চেয়ে ৬৫ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫০ টাকায় এবং খুচরা পর্যায়ে ১৪০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
নগরীর চৌমাথা এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক যমুনার ডিলার শাহিন হোসেনের দাবি, কোম্পানি থেকেই বেশি দামে গ্যাস কিনতে হচ্ছে। তাই সরকারি নির্ধারিত দামে গ্যাস বিক্রি করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, যমুনা ১২ কেজি গ্যাসসিলিন্ডার ১৩৫০ টাকায় খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করা হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতা এই দামে গ্যাস নিয়ে ক্রেতাদের কাছ থেকে আরো বাড়তি দামে বিক্রি করলে আমাদের কিছু করার থাকে না।

সেনা এলপিজি’র ডিলার সাইফুল আহসান আজিম বলেন, দোকান, গোডাউন ভাড়া ও কর্মচারি বেতনসহ সিলিন্ডার প্রতি ৩০ টাকা বাড়তি খরচ হয়। তবে চাহিদা তুলনায় কম বিক্রি হলে এ খরচ দ্বিগুণ হয়ে যায়। এ কারণে কিছুটা বাড়তি দামে গ্যাস বিক্রি করতে হয়।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইন্দ্রানী দাস বলেন, সরকারি নির্ধারিত চেয়ে অতিরিক্ত দামে গ্যাস বিক্রি না করতে এবং গ্যাসের সাথে বাউচার দেয়ার জন্য ডিলারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মনিটংরি অব্যহত রয়েছে।

 


আরজেএন
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন