'আমাদের কবরের জায়গা কোথায়?'


মানুষ মাত্রই মরণশীল। আমাদের সকলের একদিন মরতে হবে। এই মরার পরে কোথায় আমাদের কবর হবে তা নিয়ে প্রতিদিন ভাবতে হচ্ছে। আমাদের কোনো জায়গা-জমি নেই। এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ২ শতাংশ জায়গা দেওয়া হয়েছে। এই ২ শতাংশ জায়গার ওপরই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে কোনো মানুষ মারা গেলে তাকে কবর দেওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই। তাহলে আমাদের কবরের জায়গা কোথায়? এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের দেবগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত মো. হান্নান মোল্লা (৬২)।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত ইদরিস মোল্লা (৬০) বলেন, আমরা যারা এখানে বসবাস করি তাদের মধ্যে অনেকই রোগাক্লান্ত ও বয়স্ক ব্যক্তি রয়েছেন। যেকোনো সময় যে কেউ মারা যেতে পারেন। আর এই মুহূর্তে কেউ মারা গেলে এখানে কবর দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। আশপাশের অধিকাংশ এলাকাতেই হিন্দুদের বসবাস। দুই তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনো কবরস্থান নেই। তাহলে আমরা মৃত ব্যক্তিদের কোথায় কবর দেবো? আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের একটি কবরস্থান তৈরি করে দেওয়া হোক।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত জরিনা বেগম বলেন, আমরা ভূমিহীন। আগে যেখানে বসবাস করছি সেখানেও আমাদের কোনো জায়গা-জমি ও ঘরবাড়ি নেই। প্রধানমন্ত্রী আমাদের একটি পাকা ঘর দিয়েছেন। আমরা এই ঘর পেয়ে খুব খুশি। জীবনে স্বপ্নেও এ ধরনের পাকা ঘরের কথা ভাবিনি। আগে রোদে পুড়েছি, বৃষ্টিতে ভিজেছি। এখন আমরা এখন পাকা ঘরে বসবাস করছি। আশা করি প্রধানমন্ত্রী আমাদের এখানে কবরস্থানসহ স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অন্যান্য বিষয়গুলো দেখবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমাদের সকলেরই একদিন মরতে হবে। সেক্ষেত্রে কবরস্থানের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের দক্ষিণ পাশে ১০ শতাংশ সরকারি জায়গা রয়েছে। আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে এখানে একটি কবরস্থানের ব্যবস্থা করে দেবো। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের জন্য একটি লাইব্রেরি, শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা ও বৃক্ষরোপন করা হয়েছে।
এইচকেআর
