দক্ষিণ ইউরোপে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ, দাবানল ও স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি


দক্ষিণ ইউরোপজুড়ে শুরু হয়েছে ২০২৫ সালের গ্রীষ্মের প্রথম বড় তাপপ্রবাহ। ইতালি, স্পেন, গ্রিস, পর্তুগাল ও ফ্রান্সে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (১০৪ ফারেনহাইট) বেশি ছাড়িয়ে গেছে, ফলে ব্যাপক স্বাস্থ্য সতর্কতা এবং দাবানলের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পর্তুগালের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা রোববার উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। রাজধানী লিসবনে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৭.৬ ফারেনহাইট) পর্যন্ত ওঠার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা সারা দেশে চরম অগ্নি-ঝুঁকির সতর্কতা জারি করেছে।
স্পেনের আবহাওয়া সংস্থা বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে, যেখানে বলা হয়েছে খুব উচ্চ ও স্থায়ী তাপমাত্রা বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের সেভিলে শহরে বসবাসকারী দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। সেখানেও তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে।
ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশটির ২৭টি বড় শহরের মধ্যে ২১টিকে রেড অ্যালার্ট জোন ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রোম, মিলান ও নেপলস রয়েছে। লাজিও, টাসকানি ও উমব্রিয়া অঞ্চলে তীব্র গরমের সময়ের মধ্যে বাইরের কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিসিলি ও লিগুরিয়ায় এরই মধ্যে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে।
ফ্রান্সের ১০১টি প্রশাসনিক বিভাগের মধ্যে ৮৪টিতে তাপপ্রবাহ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মার্সেই শহরে জনগণের জন্য বিনামূল্যে সুইমিং পুল খোলা রাখা হয়েছে।
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের দক্ষিণে বৃহৎ একটি দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। অন্তত পাঁচটি এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং প্রাচীন পোসেইডন মন্দিরের পাশের উপকূলীয় মহাসড়কের একটি অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পূর্ব মিডল্যান্ডস, সাউথ ইস্ট, সাউথ ওয়েস্ট, লন্ডন ও ইস্ট অব ইংল্যান্ড অঞ্চলে অ্যাম্বার হিট-হেলথ অ্যালার্ট জারি হয়েছে, যেখানে সোমবার তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে। ইয়র্কশায়ার, হাম্বার ও ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসে ইয়েলো অ্যালার্ট চলছে। লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, চলমান শুষ্ক আবহাওয়ায় দাবানলের ঝুঁকি গুরুতর।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থা কোপারনিকাস জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মার্চ ছিল ইউরোপে রেকর্ডকৃত ইতিহাসে সবচেয়ে গরম মার্চ, যেখানে গড় তাপমাত্রা ১৯৯১-২০২০ সালের তুলনায় ২.৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এ ধরনের ভয়াবহ তাপপ্রবাহ আরও ঘন ঘন ও তীব্র হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
