বরিশালে শীতের আমেজ, ১০-২০ শতাংশ বৃদ্ধি গরম পোষাকের দাম

বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে শীতের আমেজ বইতে শুরু করেছে। তবে চারদিন পর থেকে শীতের আমেজ আরও বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে সকাল ও সন্ধ্যায় বাতাসের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতের আগমনী বার্তা স্পষ্ট হয়েছে এবং কুয়াশার চাদর চারপাশে দেখা যাচ্ছে।
এই সময়ে শীতের পোশাক বিক্রির জন্য ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান এবং মার্কেটগুলোতে শীতের আমেজ বইতে শুরু করেছে। শীতের পোশাক সাজাতে শুরু করেছে ব্যবসায়ীরা।
গত সোমবার সকাল ৬ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সবোর্চ্চ ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। আগের দিন রোববার তাপমাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. আনিচুর রহমান। তিনি বলেন, ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কমবে। তারপর কিছুটা স্থির থেকে আবার কমতে শুরু করবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোরের কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে দিন শুরু করছেন স্থানীয়রা। সকালে ঘাসে ঝলমল করছে শিশির, চারপাশ ঢাকা কুয়াশায়। দিনের বেলায় সূর্যের আলোর উষ্ণতা কিছুটা মিললেও সন্ধ্যা নামতেই নেমে আসছে শীতলতা। ফলে লেপ-কম্বল, সোয়েটার ও চাদর হাতে নিচ্ছেন অনেকে। রাস্তায় মানুষকে পাতলা সোয়েটার বা জ্যাকেট পরে চলাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে।
এদিকে ঠান্ডার ইঙ্গিত বুঝে নগরের বিভিন্ন মার্কেট শীতের পোশাক সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, এখনও বিক্রি পুরোপুরি জমে ওঠেনি। আবহাওয়া পুরোপুরি ঠান্ডা না হওয়ায় ক্রেতারা অপেক্ষা করছেন।
মহসিন মার্কেটের পোশাক ব্যবসায়ী মো.মিজানুর রহমান বলেন, আমরা চলতি সপ্তাহ থেকেই দোকানে সোয়েটার, জ্যাকেট আর উলের টুপি তুলেছি। কিন্তু ক্রেতা এখনো খুব একটা আসছে না। সকালেই ঠান্ডা থাকে, কিন্তু দুপুরে আবার গরম পড়ে যায়। আশা করি চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে বিক্রি বাড়বে।
নগর ভবনের সামনে ফুটপাত ব্যবসায়ী আসলাম আলী বলেন, গত বছর নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই বিক্রি শুরু হয়েছিল। এবারও একই রকম হবে মনে হচ্ছে। এখন শুধু মানুষ দেখে যাচ্ছে, দাম জিজ্ঞেস করছে, কিনছে না। শীত নামলেই বাজারে জোয়ার আসবে।
সিটি মার্কেটের তরুণ ব্যবসায়ী আরিফুল রহমান জানান, আমরা নতুন ডিজাইনের সোয়েটার ও জ্যাকেট এনেছি, বিশেষ করে তরুণদের জন্য। দামও তুলনামূলক কম, ৭০০ টাকার মধ্যে ভালো মানের সোয়েটার পাওয়া যাচ্ছে। তবে মানুষ এখনও দেখেই যাচ্ছেন।
ক্রেতারাও শীতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গৃহিণী নাজমুন নাহার বলেন, শীত এখনো পড়েনি, তবে বাচ্চাদের জন্য আগেভাগে কিছু কিনতে এসেছি। সকাল বেলায় স্কুলে যাওয়ার সময় ঠান্ডা লাগে, তাই হালকা সোয়েটার কিনছি।
শিক্ষার্থী সামিয়া ইসলাম বলেন, নতুন ডিজাইনের জ্যাকেট আর হুডি দেখতে এসেছি, দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে, তাই ভেবে দেখছি।
দোকানদাররা বলেন, তারা আগেভাগেই স্টক নিয়ে রাখেন যাতে হঠাৎ ঠান্ডা পড়লে বিক্রির সুযোগ হাতছাড়া না হয়। পাইকারদের চাহিদা অনুযায়ী জ্যাকেট, সোয়েটার, মোজা, টুপি, কম্বল ইত্যাদি আগেভাগেই তোলা হয়েছে।
তবে ক্রেতারা দাম তুলনামূলক বেশি মনে করছেন। গত বছরের তুলনায় অন্তত ১০-২০ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। আবেদা সুলতানা বলেন, গত বছর যেটা ৬০০ টাকায় কিনেছিলাম, এবার ৭৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে নগরের একাধিক জায়গায় রাস্তার পাশে বা মোড়ে মোড়ে বসছে ভাপা পিঠার দোকান। লোকজন মনের আনন্দে বসে খাচ্ছেন সেই পিঠা।
আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. আনিচুর রহমান বলেন, আগামী ৩ বা ৪ দিন পর শীতের আমেজ অনুভূত হবে। পুরোপুরি শীতের আমেজ মিলবে ডিসেম্বর মাসে।
এইচকেআর