ঢাকা রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

লকডাউন শেষ হলেই পিয়ারা পাচ্ছেন ঘর, মা বয়স্ক ভাতা

 লকডাউন শেষ হলেই পিয়ারা পাচ্ছেন ঘর, মা বয়স্ক ভাতা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

‘হত্যা মামলায়’ মাত্র ১৩ বছর বয়সে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পিয়ারা আক্তারকে ঘর ও তার মাকে বয়স্কভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। বরিশাল জেলা প্রশাসনের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ শনিবার (০৩ জুলাই) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বাত্মক লকডাউন শেষ হলে ঘর ও বয়স্ক ভাতার কার্ড পিয়ারার কাছে হস্তান্তর করা হবে।

স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে জেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক সহায়তা করা হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, তিন দিন আগে পিয়ারা তার মঠবাড়িয়ার বাড়িতে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। তখন জেলা প্রশাসক স্যার যাতায়াতের খরচ দিয়ে দিয়েছেন। তিনি যেন আয় করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন সেজন্য ইতোমধ্যে সেলাই প্রশিক্ষণ ও মেশিন দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কারামুক্তি লাভের পর পরই জেলা প্রশাসন থেকে পিয়ারা আক্তারকে চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সে অনুসারে একটি উৎপাদন কারখানায় থাকা, খাওয়াসহ মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পিয়ারা আক্তার আগ্রহ প্রকাশ করেননি। তাকে সেই কারখানায়ও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। 

পিয়ারা আক্তার বলেছেন, জেল থেকে বের হওয়ার পর তার মানসিক অবস্থা ভালো নেই। দীর্ঘ ২৬ বছর কারাভোগে শারীরিক অবস্থাও ভালো নেই। একটু সুস্থ হলে তবেই চাকরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন। এখন আপতত তার মায়ের সঙ্গেই থাকবেন।

প্রসঙ্গত, চাচাতো বোনকে পুকুরে ঠেলে ফেলে হত্যার অভিযোগে ১৯৯৫ সালে গ্রেফতার করা হয় পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ১১ বছরের  পিয়ারা আক্তারকে। সেই শ্রেণি কক্ষ থেকে গ্রেফতারের পর থানায় রাখা হয়। থানা থেকে জেলা কারাগারে রাখা হয়। ১৯৯৭ সালের ২৪ এপ্রিল হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন করাদণ্ড দেয় আদালত। এরপর বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়। এখানে দীর্ঘ ২৬ বছর কারাভোগের পর ২০২১ সালের ১০ জুন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জসীম উদ্দিন হায়দারের বিশেষ বিবেচনায় চার বছর আগে মুক্তি পান। এরপরই মূলত তিনি ঘরে ফিরতে পারেন। এর মধ্যে অর্থাভাবে জামিনও পাননি তিনি।

পিয়ারা আক্তারের বাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের ছোট হারজি গ্রামে। বাবা আনিস মৃধা মারা গেছেন পিয়ারা গ্রেফতার হওয়ার আগেই। মা ৮০ বছরের বৃদ্ধা ছফুরা বেগম। 

পিয়ারা জানান, তার চাচা জহুরুল হকের মেয়ে মেহজাবিন পানিতে ডুবে মারা গেলে পূর্ব বিরোধের জের ধরে হত্যা মামলা দায়ের করে গ্রেফতার করানো হয় তাকে। পিয়ারাকে পুলিশ ভয় দেখিয়ে শিখিয়ে দেওয়া বক্তব্য আদালতে দিতে বাধ্য করেন। যে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মিথ্যা মামলায় ২৬ বছর কারাভোগ করেছেন সেই পৈতৃক জমি আজও দখল পায়নি তারা। বর্তমানে পিয়ারা আক্তারের বয়স ৩৮ বছর।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন