শ্রীপুরে ভেঙে পড়েছে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর

বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১৪ নং শ্রীপুর ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া মুজিব বর্ষের ঘর বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। ঘর নির্মাণে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় ইতোমধ্যে ভেঙে পড়েছে ১১ টি ঘর। এদিকে প্রতিদিন জোয়ারের পানি উঠে আটকে থাকে ঘরের চারপাশে। একটু বর্ষা হলেই মেঝেতে পানি উঠে যায়। এতে বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে আশ্রায়ন প্রকল্প। নিরাপত্তা ঝুঁকিতে অনেকেই থাকছেন না ঘরে।
জানা গেছে ,ঘর বরাদ্দ প্রতি ৩০ হাজার টাকা করে ১০৫ টি ঘর থেকে ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন চেয়ারম্যান হারুন। অর্থের বিনিময়ে সমাজের সামর্থবান ব্যক্তিদের নামে বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর। ঘর পেয়েছেন চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ মোল্লার আপন চাচাতে ভাইয়ের নাতী শ্রীপুর হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক মোঃ ছালাম খানের ছেলে মোঃ রাকিব, সরকারি রেশন ভাতা প্রাপ্ত ভোলা পাসপোর্ট অফিসের আনসার সদস্য মিজানুর রহমান।
এছাড়াও এই আশ্রায়ন প্রকল্পের ১ হাজার ফুট দূরে বিশেষ সুবিধা দিতে ধনাঢ্য ২ ব্যক্তির মেইন বসতঘরের পাশে নির্মান করেছেন ২ টি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর। যেই ঘর তারা এখন মেইন ঘরের রান্না ঘর ও লাকড়ি রাখার কাজে ব্যবহার করেন। এই দুই ব্যক্তি হলেন, আধাপাকা দোতলা ভবনের মালিক শ্রীপুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাসুদ ও চৌচালা ঘরের মালিক মাছের ব্যবসায়ীর রফিক। অভিযোগ উঠেছে তাদের এই দুজনকে বিশেষ সুবিধায় গৃহ বরাদ্দ দেয়ার জন্য ঘরপ্রতি নিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, এই চেয়ারম্যান প্রত্যেক ঘরের জন্য ৩০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। গ্রামের গরীব অসহায় মানুষদের ঘর না দিয়ে সামর্থবান, ধনীব্যক্তিদের ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন। প্রত্যেকের ঘর বুঝিয়ে দেওয়ার পর পরই কাজ নিম্ন মানের হওয়ায় ঘর ভেঙে গেছে এবং চেয়ারম্যান যেই স্থানে ঘর দিয়েছে কোনো রকম বসবাস করার অনুপোযোগী। প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়েও গরীব মানুষের কোন উপকার হলো না। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
অভিযোগের ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ মোল্লা জানান, আমার নামে তো অভিযোগের শেষ নাই। মার্ডার হলেও অভিযোগ আমার নামে আসে। আমি কোন প্রকার টাকা পয়সা নেই নাই। যাদের ঘর নাই তাদেরকেই ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এখানে কোন প্রকার স্বজনপ্রীতি বা দুর্নীতি করা হয় নাই।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদত হোসেন মাসুদ বলেন, আমি দুই মাস হল দায়িত্ব নিয়েছে । সুবিধাভোগী লোক আগেই নির্ধারন হয়েছে । তাই এখানে কোন দুর্নীতি হয়েছে কিনা জানা নেই। তবে আশ্রায়ন প্রকল্পে জোয়ারের পানি আটকে থাকে এবং ১১ টি ঘর ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এটা সত্য।
এইচকেআর