ঢাকা বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

চরফ্যাশনে জালিয়াতির মাধ্যমে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জমি বিক্রির অভিযোগ 

চরফ্যাশনে জালিয়াতির মাধ্যমে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জমি বিক্রির অভিযোগ 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

চরফ্যাশনে নিলাম জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৬ একর জমি বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে ভোলার একটি সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে কর্মরত জনৈক মো.ফরহাদ হোসেন’র নেতৃত্বে একটি ভূমিদখল চক্র এই জালিয়াতির সাথে জড়িত বলে জানাগেছে। 

কথিত নিলামের ষাট বছর পর ভূমিদখল চক্র জামির দখল নিতে প্রকাশ্যে আসার পর জালিয়াতির বিষয়টি জমির মূল মালিকরা জানতে পেরে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। চরফ্যাশন সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এ বিষয়ে মো. ফরহাদ হোসেন সহ ১৩ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশসহ পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

 জানাগেছে, চরফ্যাশনের সাবেক শশীভূষণ হালে রসূলপুর মৌজার এসএ ৬৬৩ খতিয়ানের ৩৯৭০,৩৯৭১ ও ৩৯৭৫ দাগ এবং দিয়ারা ৭৭২ খতিয়ানের ৪০৭৮ দাগের ৬ একর ৩৯ শতাংশ জমির মূল মালিক ছিলেন সাফিয়া খাতুন। সাফিয়া খাতুনের মৃত্যুর পর ওই জমির মালিক হন তার একমাত্র পুত্র বরিশালের সিএন্ডবি রোডের  বাসিন্দা অবসর প্রাপ্ত চিকিৎসক কামরুজ্জামান ও একমাত্র কন্যা পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার হোসনাবাদ গ্রামের গোলাম মোস্তফার স্ত্রী সাহেদ আরা  বেগম। মায়ের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ওই জমি স্থানীয় চাষাদের মাধ্যমে চাষাবাদ করে আসছিলেন তারা। 

গত ফাল্গুন মাসে শশীভূষণ থানার উত্তর চর আইচা গ্রামের মৃত মো. মোস্তফার ছেলে শাহজাহানের নেতৃত্বে একটিচক্র এই জমি চাষে বাধা দেয় এবং মৃত পিতা মো. মোস্তফার উত্তরাধিকার হিসেবে নিজেদেরকে ওই জমির মালিক বলে দাবী করেন। এই দাবীর পক্ষে মো. শাহজাহান গং তিনটি দলিল উপস্থাপন করেন। এই দলিলের সূত্রধরে অনুসন্ধানে জানাগেছে, ২০০০ সনের ২৬ অক্টোবর শশীভূষণ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের ২৭৮০, ২৭৮১ ও ২৭৮২ নং দলিলমূলে ওই ৬ একর ৩৯ শতাংশ জমির কথিত মালিক হন মো. মোস্তফা।

 একই দিনে এই তিনটি দলিলের দাতা ছিলেন ভোলার বোরহান উদ্দিন থানার কালমা গ্রামের সামিউল্যাহ মিয়ার ছেলে মো. ফরহাদ হোসেন এবং দলিল তিনটির পরিচিত দেন চর মানিকা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান  রমিজ উদ্দিন মোল্লা। মো. ফরহাদ হোসেন বর্তমানে ভোলার একটি সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে কর্মরত আছেন এবং রমিজ উদ্দিন মোল্লা এক যুগ আগে মারা যান বলে স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে।  মো. ফরহাদ হোসেন ১৯৬০-১৯৬২ সনের ৬৬৩ নং নিলাম খরিদ করে ওই জমির মালিকানা অর্জন করেন এবং ১৯৬৪-১৯৬৫ সনের ৭৫ নং দখলনামা ও বয়নামা নিয়ে সরেজমিনে ওই জমিতে দখলকার বিদ্যমান থেকে চরফ্যাশন সহকারী কমিশনার(ভূমি)’র আদালতে ১৯৯৪-১৯৯৫ সনের ৬৫৬ নং নামজারী মোকদ্দমার মাধ্যমে ওই জমির সমুদয় অংশ মো. ফরহাদ হোসেন নিজ নামে রেকর্ড প্রাপ্ত হন বলে দলিলের তফসিল সূত্রে জানা যায়।


মৃত পিতা মো. মোস্তফার ছেলে মো. শাহজাহান ৬ একর ৩৯ শতাংশ জমির মালিকানা প্রশ্নে মতবাদ প্রতিনিধিকে জানান, তার পিতার নামীয় তিনটি দলিলমূলে তারা এই জমির মালিকানার দাবীদার। যেসব দলিলের দাতা মো. ফরহাদ হোসেন। দাতা ফরহাদ হোসেনের মালিকানার উৎস কিংবা নিলামের অস্তিত্ব সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মোকদ্দমা চলমান। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা সামনে এগুতে চান। অভিয়োগ প্রসঙ্গে কথিত নিলামের ক্রেতা ও তিনটি দলিলেল মাধ্যমে ৬ একর ৩৯ শতাংশ জমির দাতা মো. ফরহাদ হোসেন জানান, তিনি তখন ছোট ছিলেন। তার খালু রমিজ উদ্দিন মোল্লা তাকে ডেকে জমির দলিল দিতে বলেন। খালুর কথায় তিনি তিনটি দলিল দিয়েছেন। তবে তিনি কি ভাবে এই জমির মালিকানা অর্জন করেছিলেন সে স¤পর্কে তার মোটেই ধারনা নেই। জমির দলিল দিলেও অর্থিক লেনদেন তার সাথে হয়নি, হয়েছে রমিজ উদ্দিন মোল্লার সাথে।

  তিনি আরো বলেন, এ স¤পর্কে প্রয়াত রমিজ উদ্দিন মোল্লার ছেলেরা ভালো বলতে পারবেন। প্রকাশ যে, এক যুগ আগে রমিজ উদ্দিন মোল্লা মারা যান।  
 


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন