ঢাকা সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

ইজিবাইক ছিনতাইয়ের দুদিন পরে চালকের মৃত্যু, নেই পুলিশি অ্যাকশন!

ইজিবাইক ছিনতাইয়ের দুদিন পরে চালকের মৃত্যু, নেই পুলিশি অ্যাকশন!
ইজিবাইক ছিনতাইয়ের দুদিন পরে চালকের মৃত্যু
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীর কবলে পরে ইজিবাইক (ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা) খোয়া যাওয়ার পরে এবার প্রাণ হারালেন বৃদ্ধ চালক খলিলুর রহমান। চেতনা নাশকের প্রতিক্রিয়ায় টানা দুদিন অজ্ঞান থাকার পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। নিহত খলিলুর রহমান (৬০) বরিশাল নগরীর কাউনিয়া থানাধীন বিসিক সড়কের কমিশনার গলির বাসিন্দা।

২২ জুলাই শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এর আগে গত ১৯ জুলাই গভির রাতে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার খানপুরা আলী মার্কেটে এই ঘটনা ঘটে।

তবে ওই ঘটনার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও ছিনতাইকারী চক্রের কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি এই ঘটনায় কোন মামলা কিংবা অভিযোগও হয়নি বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমলেশ চন্দ্র দাস।

নিহতের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, ‘স্ত্রী, এক কন্যা ও দুই পুত্র সন্তান নিয়ে খলিলুর রহমানের সংসার। তার ওপর কন্যা ঊর্মী অসুস্থতার কারণে মৃত্যু শয্যায়। একদিকে তার চিকিৎসার ব্যয় তার ওপর ঈদের পরেই কঠোর লকডাউন।

এমন পরিস্থিতিতে অভাবের সংসারের অর্থের যোগান দিতে গত ১৯ জুলাই বিকালে নিজের মালিকানা ইজিবাইক নিয়ে বের হন খলিলুর রহমান। ঘরে ফিরতে দেরি দেখে ওই দিন রাত ১টার দিকে তাকে কল দিয়ে খোঁজখবর নেন স্ত্রী। তখন যাত্রী নিয়ে বাবুগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলেন খলিল।

নিহতের স্ত্রী সনিয়া বলেন, বলেন, ‘ফোন করে বাসায় আসার কথা বললে গাড়িতে থাকা যাত্রী নামিয়ে দিয়ে বাসায় ফেরবেন বলে জানান। কিন্তু রাত ৩টার পরেও খলিলের বাসায় ফিরতে না দেখে পুনরায় স্বামী কল করে খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করেন স্ত্রী। কিন্তু তখন বৃদ্ধ খলিলের মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পান স্ত্রী।

পরদিন অর্থাৎ ২০ জুলাই সকালে অপর এক ইজিবাইক চালকের মাধ্যমে পরিবারের লোকেরা জানতে পারেন বাবুগঞ্জের খানপুরা আলী মার্কেট সংলগ্ন রাস্তার পাশে অজ্ঞান অবস্থায় পরে আছেন খলিলুর রহমান। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন নিয়ে খলিলকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ জুলাই সকাল ৬টার দিকে খলিল মৃত্যুবরণ করেন।

স্বজনরা জানিয়েছেন, ‘ঘটনার পরে অচেতন অবস্থায় খলিলুর হমানকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা গেলেও তার সাথে থাকা ইজিবাইক, মোবাইল সেট এবং টাকাসহ কোন কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা অবগত। তবে এই ঘটনায় থানায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা বা অভিযোগ হয়নি। নিহতের ছেলেদের বলা হয়েছে মামলা করার জন্য। কিন্তু তারা এখনো থানায় আসেনি।

তিনি বলেন, ‘ধারানা করা হচ্ছে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে খলিলকে অতিমাত্রায় নেশাজাতীয়দ্রব্য খায়িয়ে অজ্ঞান করা হয়েছে। মৃত্যুর পূর্বেপর্যন্ত তিনি অজ্ঞান অবস্থায় থাকায় ছিনতাই’র ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানা সম্ভব হয়নি। এমনকি ওইখানে কিভাবে গেলো সেটাও এখন পর্যন্ত অজানা। পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন ওসি।


কেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন