চরফ্যাশনে স্কুল বন্ধ থাকায় খাবার বিক্রি করছে শিশু শিক্ষার্থীরা


বেড়ির পারে ও রাস্তাঘাটে অস্থায়ী পসরা সাজিয়ে মুখরোচক খাবার বিক্রি করছে শিশু শিক্ষার্থীরা। শিশুরা এসব পসরাকে দোকান বলে মনে করে। তাদের ভাষ্য মতে এ দোকানগুলোর ক্রেতাও শিশু।
মঙ্গলবার বিকালে চরফ্যাসন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানাধীন চরমানিকা ইউনিয়নের (দক্ষিণ চর আইচা) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়ির পারে ও রাস্তা ঘাটে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
বেড়ির পারে ও রাস্তাঘাটে অস্থায়ী পসরা সাজিয়ে বসেছে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. কামাল। সে জানিয়েছে, আমড়া, জাম, পেয়ারা, কামরাঙ্গা, আচারসহ শিশু খাদ্য বিক্রি কেেছ। আজ (বুধবার) ১শ' ৩০ টাকার খাবার বিক্রি করেছে।
শিশু কামালের মতো আলামিন, শাকিল, ইব্রাহিম, রিয়াজ, কালু, এমন দোকান সাজিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মুখরোচক খাবার বিক্রি করে। সেখানে এসব খাবার কিনতে ভিড় করে শিশু ক্রেতারা।
করোনা মহামারীতে দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে পড়ছে। ফলে শিশুশ্রমের দিকে ঝুঁকছে শিশুরা। নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া ও খেলাধুলা করে ব্যস্ত সময় কাটানোর পরিবর্তে তাদের সময় কাটছে খাবার বেচাকেনায়। এতে অখিভাবকরা শিশুদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত।
স্থানীয় শিশু সাফায়াতের বাবা কবির হোসেন জানান, 'শিশুদের ঘরবন্দি করে রাখা যাচ্ছে না। অন্য শিশুদের কর্মকা- দেখে আমার শিশুও একই পথে এগুচ্ছে। স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনা ভুলে গেছে। এদের ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করলে শিশুরা অন্ততঃ মূর্খ থাকবে না।'
দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খোরশেদ আলম জানান, 'গ্রামের শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে সরকার বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। করোনা মহামারীতে স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে পড়েছে। অভিভাবকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি যেন, শিশুদের পড়াশোনার ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।'
চরফ্যাসন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তৃষিত কুমার চৌধুরী জানান, 'করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার শূন্যের কোটায় আনতে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। শিশু শিক্ষার্থীরা এ ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।'
এমবি
