ঢাকা শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

তিন মাসের গার্মেন্টস ব্যবসা, অন্তরালে ছোটনের ভয়াবহ গাড়ি প্রতারণা

তিন মাসের গার্মেন্টস ব্যবসা, অন্তরালে ছোটনের ভয়াবহ গাড়ি প্রতারণা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ ফেলা একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। এ কে ফ্যাশনস নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে কারখানা পরিদর্শনের নামে গাড়ি ভাড়া করে তা বিক্রি করে দিত চক্রটি। তিন মাসে ২২টি গাড়ি এভাবে বিক্রি করেছেন এ চক্রের সদস্যরা।     

সিআইডি বলছে, কারখানা পরিদর্শনের নামে গাড়ি ভাড়া করে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে গাড়িগুলো বিক্রি করে দিতেন এ চক্রের সদস্যরা। চক্রের মূল হোতা আব্দুল কাইয়ুম ছোটন। তাকেসহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৭টি গাড়ি।  


আজ (সোমবার) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।


তিনি বলেন, করোনকালে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে গার্মেন্টস কোম্পানির নামে গাড়ি ভাড়া করে প্রতারণার মাধ্যমে অন্যত্র বিক্রির ঘটনার অভিযোগ উঠছিল। একাধিক ঘটনা সংঘঠিত হলে বিষয়টি সিআইডির নজরে আসে। অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডির এলআইসি শাখা ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে জানা যায়, আব্দুল কাইয়ুম ওরফে ছোটন ওরফে ইসতিয়াক ওরফে মেহেদী হাসান গাজীপুরের গাছায় এ কে ফ্যাশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। সে সময়ই তিনি ২২টি গাড়ি ভাড়া নেন। গাড়ির মূল মালিকদের অগোচরে প্রতারণার মাধ্যমে গাড়িগুলো তিনি বিক্রি করে দেন। গাড়ি বিক্রির নগদ ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা নিয়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। গাড়ির প্রকৃত মালিকরা তাদের গাড়ি ও আব্দুল কাইয়ুমের কোনো সন্ধান না পেয়ে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা দায়ের করেন। 

সিআইডি মামলাগুলোর তদন্তে নেমে একটি চক্রকে চিহ্নিত করে। এরপর মানিকগঞ্জ পৌরসভার শহীদ রফিক সড়ক থেকে আব্দুল আলী মিজি ওরফে আব্দুল হাই (৪৬) ও তার ছেলে নাজমুল হাসানকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি গাড়ি।

জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রটির প্রধান সহযোগী সানি রহমানকে (২০) দিনাজপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী রংপুরের শাপলা চত্বর এলাকা থেকে সাজরাতুল ইয়াকিন রানা (৩৩) নামে একজনকে গ্রেফতার ও সাদা রংয়ের ‘এক্সিও’ গাড়ি  (রেজি ঢাকা মেট্রো গ ২২-৪৭৪০) উদ্ধার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যাদি পর্যালোচনা শেষে উত্তরা এলাকা থেকে আরও চারটি গাড়ি উদ্ধার করা হয়।

এলআইসির একাধিক টিম ঢাকা ও পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে আলমগীর শেখ (৪৮), ও মো. সেলিম (২৭) নামে আরও দুজনকে গ্রেফতার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের মূল হোতা কথিত গার্মেন্টস ব্যবসায়ী আব্দুল কাইয়ুমের নাম উঠে আসে। পরে খুলনার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। 

মুক্তা ধর বলেন, আব্দুল কাইয়ুম গাজীপুরে প্রত্যাশা নামে একটি এনজিওতে চাকরি করতেন। সেখানে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতার কারণে তার চাকরি চলে যায়। এরপর তিনি গাজীপুরে এ কে ফ্যাশনস নামে পোশাক কারখানা স্থাপন করেন। এরপর তিনি ২২টি গাড়ি ভাড়া নেন ও ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সেগুলো বিক্রি করে দেন। বিক্রির আগে প্রত্যেকটি গাড়ির জিপিএস সিস্টেম অকেজো করে দেন তিনি। 

এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তা ধর বলেন, আব্দুল কাইয়ুম ছোটনের এই গার্মেন্টস ব্যবসার মেয়াদ ছিল মাত্র তিন মাস। এই স্বল্প সময়ে পণ্য উৎপাদন ও রফতানি করা যায় না। মূলত প্রতারণার জন্যই তিনি গার্মেন্টস ব্যবসাকে কাজে লাগান। আব্দুল কাইয়ুমসহ অন্য প্রতারকদের বিরুদ্ধে গাছা থানায় মামলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন