পরীমণির অবস্থা মাছের মতো : ঝন্টু


‘ছোট গর্তের মধ্যে একটা মাছ ছোট থেকে বড় হলে সেই মাছটি যদি পুকুরে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে মাছটি অনেক জোরে জোরে দৌড়ায়। মাছটিকে নদীতে ফেললে দৌড়াতে দৌড়াতে হয়রান হয়ে কানটা উঁচু করে শ্বাস নিতে থাকে। ওর (পরীমণি) এই অবস্থা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি এতকিছু হয়ে যাওয়াতে বোধহয় নিজেকে সামলাতে পারেনি।’ মাদক মামলায় আটক চিত্রনায়িকা পরীমণি সম্পর্কে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু।
তিনি জানান, ‘এক হাতে তালি বাজে না। তবে প্রথম দোষটা আমি ওকেই (পরীমণি) দিবো। তুমি এক্সেপ্ট করো কেন তাকে? তুমি রাত ১২টা সময় কেন যাবা? কেন মদ খাবা? যারা আসছে তারাও খারাপ, যার কাছে আসছে সেও খারাপ।’
নায়িকা হিসাবে রাতারাতি তারকা বনে যান পরীমণি। অঢেল টাকা আর অভিজাত জীবন যেন স্বেচ্ছায় ধরা দেয় তার হাতে। দামি গাড়ি, কোটি টাকার ফ্ল্যাট, মূল্যবান অলঙ্কার কি নেই তার? অথচ তার সমসাময়িক নায়িকাদের অনেকে বাসা ভাড়া দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু বলেন, ‘পরীমণি যত বছর ধরে চলচ্চিত্রে আছে সে অনুযায়ী যে বাড়ি, গাড়ি, টাকা-পয়সা, ৪-৫টা করে গরু জবাই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তো এত টাকা আসার কথা না। এগুলো কোথায় থেকে এসেছে, মানুষ তো প্রশ্ন করবেই। দোষটা তারই।’
জানা যায়, সিনেমার শুটিংয়ের আড়ালে প্রভাবশালীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে বেশি পছন্দ করতেন পরীমণি। রাজধানীর বিভিন্ন পাঁচতারকা হোটেলে প্রায় প্রতিদিনই গভীর রাত পর্যন্ত পার্টি শেষে মদ্যপ অবস্থায় বের হতেন তিনি। এই নায়িকা নিয়মিত ধূমপান করেন। তার বাসায় বিদেশি সিগারেট ও মদের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে।
অভিযোগ আছে, পরীমণি কথায় কথায় পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করেন। পুলিশও তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। গায়ে দামি পারফিউম মেখে বিলাসবহুল গাড়িতে ঘুরে বেড়ানো পরীর মুখে মদের গন্ধ থাকলেও কেউ তাকে আটকায় না।
জানা গেছে, দেশের সব অভিজাত ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে পরীমণির বেশ ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তাদের রেফারেন্সে তিনি বিভিন্ন ক্লাবে যাতায়াত করেন। তারকা হোটেলের বারেও তার যাতায়াতের রেকর্ড রয়েছে। এছাড়াও তার ঘনিষ্ঠদের তালিকায় আছেন অনেক প্রভাবশালীর নাম। যাদের কেউ কেউ পরীকে সঙ্গে নিয়ে বিদেশেও ঘুরতে যান।
এখানেই পরীর উশৃঙ্খলতার শেষ নয়। কয়েকটি ব্যাংকে মোটা অঙ্কের টাকা রয়েছে তার। যার বেশিরভাগই শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে পেয়েছেন। জানা গেছে, এক পর্যায়ে তিনি পর্নোগ্রাফির নিষিদ্ধ জগতে প্রবেশ করেন। ঘনিষ্ঠ মডেলদের মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন একটি চক্র। যাদের কাজ হলো- উঠতি মডেল ও চিত্রনায়িকাদের পর্নোছবি তুলে সমাজের কথিত হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিদের পাঠানো। তারপর বিভিন্ন ছল-বাহানায় তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করা।
সম্প্রতি সময়ে চিত্রনায়িকা পরীমণি, মডেল পিয়াসা, মৌ, প্রযোজক নজরুল রাজসহ বেশ কয়েকজন আটক হওয়ার পর অনেকেই শোবিজের মানুষদের দিকে আঙুল তুলছে। হাতে গোনা কয়েকজনের জন্য পুরো শোবিজের মানুষের নিয়ে সাধারণ মানুষদের মধ্যে খুবই বাজে ধারণা জন্মেছে।
সেই প্রসঙ্গ টেনে নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিতে বিরাট বড় অপরাধী না সে (পরীমণি)। তুমি একটা আর্টিস্ট, তুমি কেন রাত ১২টায় ক্লাবে যাবে? আমাদের চলচ্চিত্র কেন্দ্রীক পরীমণির তো কোন ঘটনা ঘটেনি। শুটিং করতে গিয়ে হয়নি, ডাবিং করতে গিয়ে হয়নি। এমনকি কোন প্রযোজকের সঙ্গেও এমন কিছু হয়নি। যার সঙ্গে ঘটনা ঘটেছে তারা আমাদের চলচ্চিত্রের কেউ না।’
এমবি
