ঢাকা মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীর অভিযোগ

ঘুষ নিয়েও মামলা দিয়ে যুবককে জেলে পাঠালেন ওসি

ঘুষ নিয়েও মামলা দিয়ে যুবককে জেলে পাঠালেন ওসি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করেছেন মো. শফিকুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী। তার অভিযোগ স্থানীয় ইউপি সদস্য ছগিরের কাছ থেকে প্রভাবিত হয়ে ওসি এমন কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। 

মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম এই অভিযোগ তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের ২১ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মঠবাড়িয়া থানার এসআই পলাশ চন্দ্র রায় আমাকে তুষখালি বাজার থেকে পিকআপে তুলে থানায় ওসি’র কাছে নিয়ে যায়। আমাকে ধরে আনার কারণ জানতে চাইলে ওসি নুরুল ইসলাম বাদল নানা অজুহাতে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তপন দাবি করে। অন্যথায় মামলা দিয়ে কোর্টে চালান দেয়ার ভয় দেখায়। 

তিনি বলেন, ‘আমি নিরুপায় হয়ে স্ত্রী সালমা বেগমকে দিয়ে বাড়ি থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে আসি। ওসি’র রুমের মধ্যে বসে সেই টাকা থেকে ওসিকে ৬ হাজার এবং এসআই পলাশকে তিন হাজার টাকা দিয়েছে। পরে আমি মুক্তি চাইলে ওসি বলেন, ‘তোকে ছাড়িয়ে নিতে ছগির মেম্বার আসবে’। বলতে না বলেই ছগির মেম্বর এবং তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে শামিম ওসি’র রুমে প্রবেশ করে। শফিকুল বলেন, ‘আমি ওসিকে প্রশ্ন করি ‘ওরাই আমাকে ধরিয়েছে আবার ওরাই আমাকে ছাড়াবে? এ কথা বলা মাত্রই ওসির সামনে বসেই ছগির মেম্বার আমাকে মারধর শুরু করে। মারধর শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমাকে থানা হাজতে আটকে রাখে।

 এ ঘটনার পরে ছগির মেম্বার ছোট মাছুয়া গ্রামের তাসলিমা বেগমকে দিয়ে মারামারির মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমার বিরুদ্ধে একটি মামলা করে পরদিন আদালতে সোপর্দ করেন। ২২ জুলাই মঠবাড়িয়া থানায় মামলা নম্বর ৩৩/২৬৯। ওই মামলায় ২০ দিন হাজতবাসের পরে আমি জামিনে মুক্তি পাই। শফিকুলের অভিযোগ, তুষখালীর ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান এবং মেম্বার ছগির মিলে ওসি’র মাধ্যমে আমাকে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে জেলে আটকে রেখেছে। তাছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আন্তর্জাতিক চোরাকারবারি চক্রের সদস্য। ২০০৭ সালে ভারত থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে পাঁচ কোটি টাকার ভারতীয় কাপড় পাচারকালে কোষ্টগার্ডের হাতে ধরা পরে। 

ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় জেল খেটে জামিনে মুক্ত হন। এছাড়া ছগির মেম্বারের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া এবং পিরোজপুর সদর থানায় মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছগিরের বিরুদ্ধে রাজধানীর মতিঝিল থানায় সন্ত্রাস ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে একটি মামলার তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ। 

শফিকুল ইসলাম দাবি করেন, ‘ইতিপূর্বে এই ষড়যন্ত্রকারী এবং ওসি’র বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি। উল্টো এই ঘটনা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আরও একাধিক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে আমাকে। এমন পরিস্থিতি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। অভিযোগ অস্বীকার করে ছগির মেম্বার বলেন, ‘শফিকুলকে আমি মারধর করিনি। তাছাড়া আমার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে একাধিক মামলা থাকলেও বর্তমানে সেগুলো সমাধান হয়ে গেছে। মঠবাড়িয়া থানার ওসি নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, ‘ঘুষ বা প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। সমঝোতার জন্য শফিকুল এবং ছগির মেম্বারকে থানায় ডাকা হয়েছিল। সমঝোতা বৈঠকের মধ্যে ছগির মেম্বার তাকে মারতে উদ্ধত হলে আমি তাতে বাধা দেই।
 


এইচেকআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন