ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

লঞ্চের ছাদে ডিজে পার্টি, মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু

লঞ্চের ছাদে ডিজে পার্টি, মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

কুমিল্লার তিতাসে পিকনিকের লঞ্চের ছাদে ডিজে পার্টি করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে ১ কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। আহত  হয়েছে আরও ১৪ জন। এদের মধ্যে ৪ জনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইউনিটে প্রেরণ করা হয়েছে।

সোমবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার দড়িকান্দি ব্রিজ সংলগ্নে এমন ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোর উপজেলার শিবপুর গ্রামের সিএনজিচালক আব্দুল মতিনের ছেলে মৌটুপী দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শামীম আহমেদ (১৪)।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শিবপুর গ্রামের যুবক ও কিশোরদের উদ্যোগে লঞ্চের মাধ্যমে ডিজে পিকনিকের আয়োজন করা হয়।

মঙ্গলবার সকালে ২০ হাজার টাকায় ভাড়াকৃত মেসার্স বাদল সরকার অ্যান্ড সন্স দোতলা লঞ্চটি নিয়ে পিকনিকে বের হওয়ার আয়োজন সম্পন্ন করা হয়।

সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় ২০ জনের একটি গ্রুপ ট্রায়াল দেওয়ার জন্য লঞ্চটি নিয়ে তিতাস নদীতে বের হয়। লঞ্চটি ভ্রমণ করার সময় তিতাস নদীর দুইপাড় দড়িকান্দি থেকে শিবপুরে টানা বিদ্যুৎ লাইনের তারের সাথে ছাদে থাকা কিশোররা জড়িয়ে যায়।

এ সময় লঞ্চের ছাদে থাকা কিশোররা মিউজিকের তালে তালে নাচানাচি করছিল। তখন বিদ্যুতায়িত হয়ে বেশ কয়েকজন পানিতে আর লঞ্চের মধ্যে আহত অবস্থায় পড়ে যায়। তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করেন। 

এ সময় শামীম হোসেন নামে সপ্তম শ্রেণির মাদ্রাসাছাত্র লঞ্চ থেকে পানিতে পড়ে যায়। তাকে সারারাত খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকাল ৭টায় শামীমের লাশ শিবপুর নদীর মুখে ভেসে উঠলে তিতাস থানা পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় দাউদকান্দি ও তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ জনকে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে ৪ জনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। 

মৃত ছাত্রের বাবা সিএনজিচালক আব্দুল মতিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে বায়না ধরেছিল পিকনিকে যাওয়ার জন্য। কিন্তু আমি টাকা দিতে পারব না বলায় সে বলে- তাহলে বাবা কয়েকজন মিলে ট্রায়ালে যাচ্ছে আমিও তাদের সঙ্গে যাই। এই বলে সে বাসা থেকে বের হয়।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাত ১০টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. রাশেদা আক্তার, তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ আহমেদ ফকির আহতদের দেখতে যান।

তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, অপসংস্কৃতি বন্ধের ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে পুলিশ তাৎপর রয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ডিজে পিকনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারপরও এর প্রবণতা এত বেড়ে গেছে, যার ফল আজকের এ দুর্ঘটনা। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. রাশেদা আক্তার বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্চস্বরে মিউজিক বাজিয়ে পিকনিকের বিষয়টি নিয়ে গত আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় প্রতিটি ইউপি চেয়ারম্যানকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ অপসংস্কৃতি বন্ধ করা যাচ্ছে না। এতে স্থানীয় লোকজনের এগিয়ে আসা উচিত।


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন