সরোয়ারের বোন লিমার ময়না তদন্ত করেছে মেডিকেল বোর্ড

রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হওয়া বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ারের চাচাতো বোনের মৃতদেহের ময়না তদন্ত করেছে ছয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। শনিবার দুপুরে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পরে থানা পুলিশ মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে।
অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার উপ-পরিদর্শক হেমায়েত বলেন, ‘নিহত লিমার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। নিজ ঘরের মধ্যে তার অপমৃত্যু হয়েছে। এমনকি তার গলায় ফাঁসের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক রহস্য বেরিয়ে আসবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দাফনের আগমুহূর্তে কাউনিয়া সাধুর বটতলা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় দুই সন্তানের জননী লিমা (৪০) মৃতদেহ। নিজ ঘরে লিমার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে দাবি করে তড়িঘড়ি করে মৃতদেহ দাফনের ব্যবস্থা করেন স্বজনরা। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে জানাজা নামাজ শেষে গোরস্থানে দেয়ার পথে মৃতদেহ হেফাজতে নেয় পুলিশ।
নিহত লিমা সাধুর বটতলা এলাকার বাসিন্দা মৃত খায়রুল আলম মোল্লার স্ত্রী এবং বিএনপি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল সিটি’র প্রথম মেয়র এবং সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমানের চাচাতো বোন। তিনি নগরীর গির্জা মহল্লা এলাকায় মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসে চাকরি করতেন।
কাউনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছগির আহমেদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে মেডিনোভায় ডিউটি শেষ করে বাসায় ফিরে নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন লিমা। পরবর্তীতে বাড়ির লোকজন নাকি দরজা ভেঙে ভেতর থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
তিনি বলেন, ‘লিমার মৃত্যু স্বাভাবিক দাবি করে তড়িঘড়ি করে দাফন কাফনের চেষ্টা করেন তার স্বজনরা। বিষয়টি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। খবর পেয়ে আমিসহ পুলিশের টিম ওইদিন সন্ধ্যায় নিহতের বাড়িতে যাই।
গিয়ে দেখতে পাই জানাজা শেষে মৃতদেহ দাফনের জন্য গোরস্থানে নিয়ে যেতে বাড়িতে তোলা হচ্ছে। সেখান থেকেই আমরা মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করি। এরপর শনিবার সকালে মৃতদেহের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা যা কিছু করেছি তা আইনের মধ্যে থেকেই করেছি’ বলে জানান এই কর্মকর্তা।
অপমৃত্যু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হেমায়েত বলেন, ‘শুক্রবার সকালেই মৃতদেহের ময়না তদন্ত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা ঝুঁকি নিয়ে এককভাবে ময়না তদন্ত করতে রাজি হননি। পরবর্তীতে ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে শনিবার ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, ‘লিমা’র প্রথম স্বামী খায়রুল আলম মোল্লার মৃত্যু হয়েছে অনেক আগেই। প্রথম স্বামীর সংসারে একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে রয়েছে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে এবং ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।
মেডিনোভায় চাকরির টাকায় সংসার চলত লিমার। তবে স্বামীর মৃত্যুর পরে অপর এক ব্যক্তিকে নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করেন লিমা। তবে মেডিনোভা থেকে বাসায় ফিরে হঠাৎ করে তার অপমৃত্যুর কারণ জানা নেই কারোর। অবশ্য পরিবারের অনেকেই দাবি করছেন নিজ ঘরে ফ্যানের সাথে ওড়ানা পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছেন লিমা।
এমবি