বড় ভাইয়ের মৃত্যু শোকে ছোট ভাইয়ের নদীতে ঝাঁপ

দুই ভাই একসঙ্গে বড় হয়েছেন। বড় ভাই ব্যবসা শুরু করেন। সেই ব্যবসায় যোগ দেন ছোট ভাইও। তাদের ভাইদের মধ্যে ছিল প্রচণ্ড মিল। একজন অপরজনকে ভালোবাসতেন বেশ। বড় ভাইয়ের ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর ছোট ভাই সেটা মেনে নিতে পারছিলেন না। অবশেষে রবিবার বড় ভাই মারা যান। সেই শোক সইতে না পেরে ব্রিজের ওপর থেকে বুড়িগঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে মারা গেছেন ছোট ভাই।
মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর পুরান ঢাকায়। ক্যান্সারে আক্রান্ত ভাইয়ের নাম আবদুল আজিজ (৩৬) ও বুড়িগঙ্গায় মারা যাওয়া ভাইয়ের নাম আসাদ (৩৪)।
তাদের স্বজনরা জানিয়েছেন, দুই ভাই রাজধানীর চকবাজার থানাধীন হোসেনি দালান এলাকার একটি বাড়িতে বসবাস করতেন। দুজনেরই স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। তাদের বাড়ির সামনে ‘আসাদ নাস্তা ঘর’ নামের একটি খাবারের হোটেল রয়েছে। যেটি ওই এলাকার জনপ্রিয় হোটেল। দু’জন মিলে ছোট থেকে একসঙ্গে ব্যবসা করতেন। তাদের মধ্যে ছিল গভীর ভালোবাসা। বড় ভাই আবদুল আজিজ বেশ কিছুদিন ধরে ব্লাড ক্যান্সারে ভুগছেন। রবিবার তার অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অস্ত্রোপচারের আগেই তিনি মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে মারা যান। ছোট ভাই মো. আসাদ বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবর সইতে না পেরে পুরান ঢাকার বাবুবাজার ব্রিজের ওপর থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন বুড়িগঙ্গা নদীতে।
আশা নামের এক প্রতিবেশী সাংবাদিকদের জানান, বড় ভাই বাঁচবে না এমনটাই জেনে ছিলেন ছোট ভাই আসাদ। তাদের ধারণা, কাউকে কিছু না বলে আজ ভোরে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। পরে তার কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। জোহরের নামাজের পর বড় ভাইয়ের জানাজা শেষে সংবাদ পাওয়া যায় আসাদও মারা গেছেন। তিনি বুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে মারা গেছেন।
সদরঘাট নৌ থানার সাব-ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম জানান, তারা আজ দুপুর দেড়টার দিকে আসাদের মরদেহ ভাসমান অবস্থায় নদী থেকে উদ্ধার করেন। পরে তার লাশ মিটফোর্ড হাসপাতল মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
আসাদের আত্মীয় রাসেল জানান, আসাদের বড় ভাই আব্দুল আজিজ ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আর আসাদ সকালে বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায়। পরে খবর পাওয়া যায়, বাবুবাজার ব্রিজের ওপর থেকে নদীতে লাফিয়ে পড়ে তিনি মারা গেছেন। আজিজ এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন। আসাদ এক পুত্রসন্তানের জনক। দুই ভাই স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে এক বাড়িতেই থাকতেন। দুই ভাইয়ের লাশ দেখে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
এমবি