ঢাকা সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

Motobad news

দীর্ঘ ১৮মাস পর বিদ্যালয়ে গেলেন পাথরঘাটার শিক্ষার্থীরা

দীর্ঘ ১৮মাস পর বিদ্যালয়ে গেলেন পাথরঘাটার শিক্ষার্থীরা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

করোন মহামারী শুরুর দীর্ঘ ১৮মাস পর বিদ্যালয়ে গেলেন শিক্ষার্থীরা। বরগুনার পাথরঘাটায় এমন দৃশ্য দেখাগেছে। স্কুল খুলবে সরকারের এমন ঘোষনার পর থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। কিন্তু দীর্ঘদিনের স্কুলে না যাবার অভ্যাসের কারণে স্বাভাবিকভাবেই সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছে অনেকরেই।যাদের বাড়ী স্কুলর নিকটে বিছানায় থাকতেই বিদ্যালয়ের ঢং ঢং ঘণ্টা কানে এলো তাই ঘণ্টা শুনেই তড়িঘড়ি করে ইউনিফর্ম পরে বই খাতা নিয়ে ক্লাসে দৌড়।

টানা ৫৪৪ দিন পর রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) ক্লাসে ফিরেছে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। আবার ক্লাসের ফাঁকে স্কুলের মাঠে ছোটাছুটি করার দুরন্তপনা শুরু হবে। স্কুলগামী সন্তানের পাশাপাশি বদলে যাচ্ছে বাবা-মায়ের দৈনিক রুটিনও। শিক্ষকরা পাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের সান্নিধ্য। সহপাঠীদের সঙ্গ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। গ্রামাঞ্চলের ঘরবন্দি শিশুরা পাচ্ছে মুক্তির আনন্দ। করোনা মহামারিতে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফের বাজল ঘণ্টা। ফের ফিরেছে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য।

বছরের প্রথম দিনের মতো সব শিক্ষার্থীকে বরণ করে নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে পাথরঘাটার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আজকের দিনটা যেন আনন্দে কাটছে, সেজন্য ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে স্কুলের ফটক। বেলুন আর নানা রঙের কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছে শ্রেণিকগুলো। এছাড়া সারিবদ্ধ শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে করতালির মাধ্যমে বরণ করার হরেক রকম আয়োজন করেছে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দেখে শিক্ষকদের মধ্যেও আনন্দ দেখা গেছে। পাথরঘাটা তাসলিমা মেমোরিয়াল একাডেমীর শিক্ষার্থী অপু জানান, অনেক দিন পরে স্কুলে গিয়েছি খুব ভাল লাগল। 

 

পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের মূল ফটকে হাত ধোয়ার জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সাবান এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
পাথরঘাটা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ছগির হোসেন বলেন, এটি অবশ্যই আনন্দের বিষয়। বিদ্যালয় খোলার সঙ্গে সঙ্গেই পুরোনো স্মৃতি হিসেবে প্রতটি শ্রেণিতে কচিকাচা শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিচ্ছি। যে সব শিশু শিক্ষার্থী আসেনি বা আসতে দেড়ি হচ্ছে তাদেরও ফোন দিয়ে খবর নিচ্ছি। বছরের প্রথম দিনের মতো আনন্দ উল্লাস চলছে।
তিনি আরও বলেন, এই আনন্দ যেন বিষাদ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আনন্দের পাশাপাশি আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, করোনা সংক্রমণ যাতে বেড়ে না যায়, সেজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আমাদের প্রতিষ্ঠানে সব রকমের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাস রুটিন অনুযায়ী পাঠদান করা হবে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনার ছোবলে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায়। মে মাস থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা ও জুলাই মাস থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকা, দুর্বল ও ধীরগতির ইন্টারনেট এবং ইন্টারনেটের উচ্চমূল্যের কারণে উপকূলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর পক্ষেই অনলাইন ক্লাস করা সম্ভব হয়নি। এ কারণেও অনেকটা পিছিয়ে ছিল প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা। উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের প্রশিক্ষক প্রকাশ মন্ডল বলেন, আমি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে অনেক আগ্রহ দেখা গেছে এবং প্রতিটি বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান করা হচ্ছে।

পাথরঘাটা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার গোলাম হায়দার বলেন, পাথরঘাটা উপজেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালযয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি রূহিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মাটির নিচ থেকে গ্যাস ওঠায় বিকল্প পার্শ্ববর্তী একটি টিনের ঘরে পাঠদান শুরু করা হয়েছে।


এইচেকআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন