ইউএনওর নিজ জন্মনিবন্ধনে ভুল, সব কার্যক্রম স্থগিত

‘উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিজ জন্মনিবন্ধনে সমস্যা থাকার কারণে জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। উক্ত সমস্যা সমাধান হলে পুনরায় কার্যক্রম শুরু করা হবে। আদেশক্রমে-কর্তৃপক্ষ।’
এমন একটি নোটিশ দেখা গেছে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে; যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তবে বিষয়টি স্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা আক্তার।
সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জন্মনিবন্ধন সংশোধনী কক্ষের সামনে গিয়ে এমন নোটিশ দেখতে পান বলে একাধিক ব্যক্তি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার বাইরের লোকজনের জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত ভুলগুলো সংশোধন ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যে ফরমটি দেওয়া হয় তাতে উপজেলা কার্যালয় থেকে একটি স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয়। সপ্তাহে প্রতি সোমবার উপজেলা কার্যালয় থেকে এ কাজটি করা হয়।
সোমবার সকাল থেকে নিবন্ধনে নামসহ বিভিন্ন তথ্যের ভুল সংশোধনের জন্য একাধিক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে নিবন্ধন সংশোধনী কক্ষের সামনে একটি নোটিশ দেখতে পান।
এ বিষয়ে অফিসে থাকা লোকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা নোটিশে সব লেখা আছে বলে জানান, এর বাইরে আর কোনো কথা বলতে রাজি নন তারা। এমন পরিস্থিতিতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিবন্ধন সংশোধন আগ্রহী অনেকেই আবেদন নিয়ে ফিরে গেছেন। এমন ঘটনাকে হয়রানি বলেও অভিযোগ করছেন অনেকে।
কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের নাজিম উদ্দিন নামের একজন বলেন, তার ছেলের জন্মনিবন্ধন সনদে নামের বানান ভুল থাকার কারণে সোমবার সকালে তিনি নরোত্তমপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান। পরে সেখান থেকে একটি ফরম নিয়ে স্বাক্ষর আনতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে ফরমটি জমা দিতে চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন জানান কক্ষের বাইরে নোটিশ দেওয়া আছে। নোটিশ পড়ে তিনি জানতে পারেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের জন্মনিবন্ধনে ভুল থাকায় সব কার্যক্রম স্থগিত আছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, একজন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে শত শত লোকের নিবন্ধনে সংশোধন কার্যক্রম কেন বন্ধ থাকবে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।
একই ইউনিয়নের রাশেদ নামের একজন জানান, নিজের ছেলের জন্মনিবন্ধন সনদে তার (বাবার) নাম ভুল আসার কারণে তিনি দুপুরে তা সংশোধন করতে যান। ওই সময় নোটিশটি দেখে তিনিসহ প্রায় ২০-২২ জন ফরমে স্বাক্ষর ছাড়াই ফিরে আসেন। কবে আসতে হবে জানতে চাইলে অফিসের একজন কর্মকর্তা তাকে জানান আগামী ২০ অক্টোবরের পরে যোগাযোগ করবেন।
এ বিষয়ে জানতে কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসিনা আক্তারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, আমার নিজের জন্মনিবন্ধন সনদে ভুল রয়েছে, আমারটা সংশোধন হলে তারপর থেকে জন্মনিবন্ধন সংশোধনের ফরমগুলো জমা নেওয়া হবে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান জানান, বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে এ সম্পর্কে খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এমবি