স্বামীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ দৃশ্য ধারণ করে স্ত্রীর মামলা

কথিত প্রেমিকার (২২) প্রতারণার ফাঁদে পড়ে তাকে বিয়ে করেন আব্দুল বারিক (৩০)। আর বিয়ের এক সপ্তাহ না যেতেই সে স্ত্রী কৌশলে তাদের আপত্তিকর দৃশ্য স্বামীর মোবাইল ফোনে ধারণ করেন।
এরপর স্বামীর ফোন ব্যবহার করে তার বন্ধু মহলে সরবরাহ করেন। এরপর সেই স্বামীকে মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। ভুক্তভোগী বারিক তার স্ত্রীর দাবি অনুসারে টাকা দিতে অস্বীকার করেন।
এ কারণে স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় তার বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ তাকে আটক করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়নের পানানগর গ্রামে। আর কথিত ওই স্ত্রীর বাড়ি নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার সমেসপাড়া গ্রামে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে থানার একজন এসআই বলেন, এর আগেও ওই নারী দুটি বিয়ে করেছেন বলে প্রাথমিক তথ্য জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে ওই নারী একটি প্রতারক চক্রের সঙ্গে জড়িত। ওই চক্রটি এই নারীকে দিয়ে বিয়ের নামে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন কিনা এ বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে। তবে যেহেতু মোবাইল ফোনে কিছু আপত্তিকর ভিডিওসহ মামলা করেছেন, সেই মামলার সূত্রে বারিককে আটক করা হয়েছে।
মামলার বাদী ওই নারী বলেন, মোবাইল ফোনে দুইমাস আগে বারিকের সঙ্গে আমার সম্পর্ক গড়ে উঠে। সে সূত্রে আমারা বিয়ে গত ২৬ আগস্ট ঢাকায় একটি কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করি। এরপর আমরা পুঠিয়াতে চলে আসি। সম্প্রতি বারিকের সঙ্গে বনিবনা না হওয়া আমি ঢাকায় চলে যায়। সেখানে একজনের সঙ্গে আমার বিয়ের কথা চলছিল। আর বারিক ওই ছেলের মোবাইল ফোনে আমাদের আপত্তিকর ভিডিও পাঠিয়ে দেয়। সে কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
বারিকের সঙ্গে তালাক না হতে আরেকজনের সঙ্গে কীভাবে বিয়ে করছেন- এমন প্রশ্নে ওই নারী বলেন, এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়।
আর কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিতে একাধিক বিয়ে করার অভিযোগ তুলেছেন আটককৃত বারিক- এমন প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে পরে কথা বলবেন বলে থানা থেকে বের হয়ে যান।
অভিযুক্ত স্বামী বারিক বলেন, আমি আগে জানতাম না এটা একটি চক্র। আর আমি ওই নারীকে বিয়ে করে প্রতারণার শিকার হয়েছি। এই মহিলার সঙ্গে বড় একটি চক্র আছে। তারা বিয়ের নামে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, আমার জানা মতে প্রবাসীসহ তিন-চারটি বিয়ে ইতোমধ্যে সে করেছে এবং কৌশলে সবার নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। আর স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হবে এটা স্বাভাবিক। আর আমার বিরুদ্ধে ভিডিও ছড়ানোর বিষয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে সে বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। তবে বিয়ের এক সপ্তাহ না যেতেই ওই নারী আমার কাছে তালাক চায়। সঙ্গে দেনমোহর ও দুই বছরের খোরপোষ বাবদ ১০ লাখ টাকা দাবি করে। তার চাহিদা মতো টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় সে ষড়যন্ত্র করছে।
পুঠিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার সন্ধ্যার দিকে ওই নারী বাদী হয়ে তার স্বামীর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দিয়েছেন। আমরা মামলা অনুসারে অভিযুক্ত তার স্বামীকে আটক করেছি। তবে বিষয়টি রহস্যজনক মনে হলেও সঠিক তদন্ত ছাড়া কিছুই বলা যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে ওই নারীর ব্যক্তিগত বিষয়গুলো জানতে বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নেয়া শুরু করা হয়েছে।
এমবি