ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

টিকা নেওয়ার পরদিনই গৃহবধূর মৃত্যু!

টিকা নেওয়ার পরদিনই গৃহবধূর মৃত্যু!
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

করোনার টিকা নেওয়ার একদিন পর মারা গেলেন কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। টিকা নেওয়ার আধাঘণ্টা পর ওই গৃহবধূর বুকে, পেটে ব্যথা ও বমি শুরু হয়। এর পর হাসপাতালে নেওয়া হলে শুক্রবার রাত ৩টার দিকে তিনি মারা যান।

এর আগে বৃহস্পতিবার উপজেলার বাকই দক্ষিণ ইউনিয়নের কোটইশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই গৃহবধূর নাম শামসুন নাহার (৬০)। তিনি উপজেলার কোটোশা গ্রামের মৃত শামসুল হকের স্ত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার উপজেলার বাকই (দক্ষিণ) ইউনিয়নের কোয়ার গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকে ৭৫০ জনকে করোনা টিকা দেওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী অজিফা খাতুন ও ক্লিনিকের দায়িত্বরত হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার পূরবী রানী দাস ওই দিন সেখানে দায়িত্ব পালন করেন।

টিকা কার্ডে সময়মতো তারিখে টিকা না নিয়ে এবং ওই ক্লিনিকে না গিয়ে শামসুন নাহার সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী অজিফা খাতুনের বাড়িতে টিকা গ্রহণ করেন। টিকা নেওয়ার আধাঘণ্টা পর তার বুকে ব্যথা শুরু হয়। কোটইশা নিজ বাড়িতে এসে শামসুন নাহার পেটে ও মাথাব্যথার পাশাপাশি বমি করতে করতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তার ছেলে শহিদ উল্লাহসহ বাড়ির স্বজনরা শামসুন নাহারকে প্রথম স্থানীয় প্রাইভেট হাসপাতালে পরে কুমিল্লা হাসপাতালে নিলে শুক্রবার রাত ৩টায় দিকে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ শনিবার নিহত ওই গৃহবধূর বাড়িতে আসেন।

টিকা প্রদানকারী উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী অজিফা খাতুন বলেন, বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় ৭৫০ জনের কার্ড অনুযায়ী টিকা দেওয়া হয়েছে। সেই দিন অন্যদের সঙ্গে শামসুন নাহার টিকা নিতে কেন্দ্রে আসেননি। তাকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম ডোজ ও ৬ জুনে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার আমার বাড়িতে টিকা গ্রহণ করেছেন সম্পন্ন মিথ্যা কথা। স্থানীয়দের কাছে শুনেছি, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন। আমাকে ফাঁসাতে স্থানীয় চেয়ারম্যান এ নাটক সাজিয়েছেন।

নিহত শামসুন নাহারের ছেলে শহিদ উল্লাহ ও মেয়ে মাহমুদা আক্তার বলেন, আমার মায়ের টিকা দেওয়ার কার্ড করে দেবে বলে ৩০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। কার্ডে নির্ধারিত সময়ে লেখা থাকলেও ওই সময় তিনি টিকা দেননি। নভেম্বর ৩০ তারিখে রাস্তার মধ্যে প্রথম টিকা দেওয়া হয়। পরে চলতি মাসে ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় টিকা প্রদানকারী মাঠকর্মী অজিফার নিজ ঘর থেকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়ে আধাঘণ্টা পর মা বাড়িতে আসেন। ফেরার পর তার বুকে, পেট ও মাথাব্যথা শুরু হয়। এর পর বমি করতে করতে মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নিলে রাতেই মারা যান। টিকা প্রদানকারী মাঠকর্মী অজিফা খাতুনের ভুলের কারণেই আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে।

এ বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাজিয়া বিনতে আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম; তবে কী কারণে ওই শামসুন নাহারের মৃত্যু হয়েছে তা তদন্ত করে বলা যাবে।


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন