খাল খননে স্বপ্ন বুনছে বরগুনার হাজারো কৃষক

খাল খননে এবার স্বপ্ন দেখছে হাজারো কৃষক। জমিতে ফসল বুনতেই যেন বৃষ্টির প্রতীক্ষা। নয়তো পানির অভাবে সব ফসল চিটা হয়ে যাবে। কিছু কিছু কৃষক আবার জমিতে ফসল ফলানোর খরচ তুলতে ব্যর্থ হতো শুধু পানির অভাবে। এখন এসব কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি।
বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের মাঝির খালটি খননের অভাবে পানি শূন্য হয়ে যেতো। এতে ফসল ফলানোসহ দুই পাশের প্রায় ১০ হাজার মানুষের কষ্ট ভোগ করতে হতো। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে খালটি খনন করা হয়। এতে ৫ শতাধিক কৃষক এবং ১০ হাজার মানুষের কষ্টের অবসান ঘটেছে।
জানা গেছে, উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের মাঝির খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬ কি.মি। ৫ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা এই খাল। খালের দুই পাশে ৬০০ বিঘা ফসলি জমি। কিন্তু পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় ভরসা ছিলো একমাত্র বৃষ্টি। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে জমি ফেটে চৌচির হয়ে যায়। তখন চাষাবাদে কৃষকের প্রয়োজন হয় পানির। একমাত্র পানির ভরসা মাঝির খালটি থাকতো পানিহীন। এতে চাষাবাদে কৃষকের বেগ পেতে হতো।
তাছাড়া বৈশাখ মাসে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কৃষক তাদের কষ্টার্জিত ফসল বাড়িতে তুলতে ব্যাপক কষ্ট পোহাতে হতো। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান মো. আশাদুজ্জান মিন্টু মল্লিকের নজরে পড়লে তিনি উদ্যোগ নেয় খালটি খননের। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএডিসির সহযোগিতায় প্রকল্প দাখিল করেন। পরবর্তীতে কৃষকের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে খালটি খনন করা হয়। এতে ৫ গ্রামের অর্ধ শতাধিক কৃষক এবং ১০ হাজার মানুষের কষ্টের অবসন ঘটেছে। ফসল ফলাতে ও বাড়িতে নিতে আর তেমন কোনো সমস্যা হবে না কৃষকের।
এ বিষয়ে কথা হয় ইউপি সদস্য মো. আবু সালেহের সাথে। তিনি জানান, কৃষকের সমস্যা কেউ না বুঝলেও আমি বুঝি। কারণ আমি নিজেও একজন কৃষক। দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষে এখন আমরা খুশি।
হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আশাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক বলেন, আমি খেটে খাওয়া মানুষের বন্ধু। তাদের ভালোবাসায় আজ একজন চেয়ারম্যান। নির্বাচিত হওয়ার পরে মাঝির খালটি খননের প্রচেষ্টা চালাই। এতে কৃষকরা আমার পাশে ছিলো। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএডিসির সহযোগিতায় খালটি যেন আজ প্রাণ ফিরে পেয়েছে। হাসি ফুটেছে কৃষক এবং তাদের পরিবারে।
বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, হলদিয়ার তক্তাবুনিয়া গ্রামের কৃষকরা দীর্ঘ দিন পানি সমস্যায় ছিলো। ফসল ফলাতে দুশ্চিন্তায় থাকতো। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য খালটি খননে সহযোগিতা চায়। কৃষকের কথা বিবেচনায় খালটি খননের প্রকল্প হাতে নিয়েছি। আশা করছি এতে ৫ গ্রামের কৃষক ও খালের দুই পাশের বসবাসরত মানুষের সমস্যা সমাধান হবে।
এসএমএইচ