কলাপাড়ায় তিন ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বাল্য বিয়ে


কলাপাড়ায় চলমান করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থবিধি উপেক্ষা করে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটিয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাল্য বিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে। সোমবার আছর নামাজবাদ উপজেলার ধানধালী ইউনিয়নের নোমরহাট বাজারে বাইতুল নূর জামে মসজিদে এ বাল্য বিয়ে সম্পন্ন করেন মসজিদের ঈমাম মো. হাফেজ ক্বারী আবদুর রহিম। এসময় তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌর কাউন্সিলর ও প্রায় ১৩ জন মেম্বারের উপস্থিতিতে মুসলিম শরিয়া মতে বিয়ের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের মৃত শহীদ মৃধার পুত্র মামুন মৃধার (৩০) সাথে চম্পাপুর ইউনিয়নের পাটুয়া আল-আমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. বাবুল মৃধার মেয়ে মারিয়ার (১৬) পারিবারিক ভাবে এই বিয়ে দেয়া হয়। মারিয়া খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবছর এসএসসি পরিক্ষা দিয়েছেন।
বিয়ের কলমা অনুষ্ঠানে ধানখালী ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ তালুকদার, চম্পাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার ও পাশ্ববর্তী আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউপির নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. মিন্টু মল্লিক স্ব-শরীরে উপস্থিত ছিলেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোন ধরনের স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই হাজারো মানুষের ভীড়ের মধ্যে দিয়ে চলে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এসময় উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরের হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা বাদল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাকে কৌশলে চায়ের দোকানে বসিয়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন বাল্যবিয়ের নেতৃত্বদানকারী চেয়ারম্যান গন। এদিকে রক্ষক কেন ভক্ষকের ভূকিমা পালন করছেন এমন প্রশ্নে সরগরম হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
সচেতন মহল বলছেন, চলমান বিধি নিষেধের মধ্যেও সব কিছু উপেক্ষা করে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটিয়ে একাধিক চেয়াম্যানের উপস্থিতিতে কিভাবে বাল্য বিয়ের মত অপরাধ সংঘঠিত হয়। এমনকি পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে বাল্য বিয়ের তথ্য পৌঁছে দেয়া হলেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। সাধারণ মানুষ বলছেন, স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতিতেই যদি বাল্য বিয়ে সম্পন্ন করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে বাল্য বিয়ের প্রবনতা আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন জানান, মারিয়া এবছর আমাদের বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। ওর বয়স ১৮ বছরের চেয়ে অনেক কম। তাকে বাল্য বিয়ে দিয়ে অন্যায় করা হয়েছে। এবিষয়ে মারিয়ার পিতা স্কুল শিক্ষক বাবুল মৃধার কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। কলাপাড়া থানার ওসি মো. জসীম জানান, চেয়ারম্যান সাহেবরা কিভাবে দাঁড়িয়ে থেকে বাল্য বিয়ে দেন। খোঁজ নিয়ে দেখছি। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মো. শহীদুল হক জানান, এবিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ নেই।
এইচকেআর
