ঢাকা বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

Motobad news

বাকেরগঞ্জে গৃহবধূর মৃত্যুর চার মাস পর উঠলো হত্যার অভিযোগ

বাকেরগঞ্জে গৃহবধূর মৃত্যুর চার মাস পর উঠলো হত্যার অভিযোগ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরিশাল বাকেরগঞ্জ বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় পরোকিয়া প্রেমের জের ধরে তিন সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর হত্যা’র অভিযোগ পাওয়া গেছে। গৃহবধূর মৃত্যুর প্রায় চার মাস পর দুলাভাইয়ের বিরুদ্ধে হত্যার এ অভিযোগ তুলেছেন নিহতের ভাই লাল হাওলাদার। তবে এ ঘটনায় এখনো থানা কিংবা আদালতে মামলা বা অভিযোগও করেনি নিহতের পরিবার। দুলালাভাইয়ের হুমকী এবং প্রাণের ভয়ে আইনের সহায়তা নিতে পারছেন না বলে দাবি অভিযোগকারী লাল হাওলাদারের। আর পুলিশ বলছে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঘটনাটি ঘটেছে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ২নং পূর্ব চরাদী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের গুয়াখালী হাওলাদার বাড়িতে। নিহত গৃহবধূ কুলসুস আক্তার (৩০) ওই গ্রামের মাসুদ হাওলাদারের স্ত্রী।

নিহত কুলসুমের ভাই লাল হাওলাদার জানান, ‘২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে নিজ ঘরে কুলসুমকে তার স্বামী মাসুদ হাওলাদার নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরের দিন সকালে স্থানীয় চিকিৎসক উজ্জল ও খোকনকে বাড়িতে ডেকে আনার পর তারা কুলসুমকে দেখে কিছু না বলেই চলে যান। পরে মাসুদ তড়িঘড়ি করে আছরবাদ জানাযা শেষে কুলসুমের দাফন সম্পন্ন করে।

লাল হাওলাদার বলেন, আমার বোনের মৃত্যুর পর যারা গোসল করিয়েছে তারা বলেছে কুলসুমের গলার নিচে ও শরীরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। বিষয়টি আমি জানার পর থেকে দুলাভাই মাসুদ বিভিন্ন লোকজনদের দিয়ে আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। এমনকি আমি যাতে থানা কিংবা বরিশালে গিয়ে এ বিষয়ে আইনী সহায়তা নিতে না পারি সে জন্য আমার ওপর নজরদারী করছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনার তিন দিন পর শুনে লালের কাছে এ বিষয়ে যানতে চাইলে সে বিভিন্ন ভয়ভীতির কথা উল্লেখ করেন। তাছাড়া ওই নারীকে গোসলের সময় তার শরীরে নির্যাতনের আলামত ছিলো বলে আমাকে স্থানীয়রা জানিয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে নিহতের পরিবার এগিয়ে না আসায় আমি নিজে থেকে এ নিয়ে কথা বলতে যাইনি। তবে এতোদিন পরে বিষয়টি যখন আলোচনায় এসেছে, এখন লাল হাওলাদার মামলা করতে চাইলে আমি তাকে সহযোগিতা করবো।

তিনি আরো বলেন, মাসুদ এলাকায় বিভিন্ন নারীদের প্রলভন দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এমনকি নিহত কুলসুমের ভাই লাল এর স্ত্রী’র সাথেও তার সম্পর্ক ছিলো বলে আমি শুনেছি।

এদিকে, অভিযুক্ত মাসুদের মামাতো ভাই শ্রমিকলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন সুজন বলেন, ‘বিভিন্ন মানুষ নানা ধরনের কথা রটিয়ে একে অপরকে হয়রানি করতে চাচ্ছে। বেশ কয়েক মাস আগে মাসুদের একটি কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকে সে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল।’ তিনি বলেন, ‘মাসুদের একটু বাজে অভ্যেস আছে বলে শোনা যায়। আর এ নিয়ে হয়তো পারিবারিক কলোহ থাকতে পারে। তবে সে জন্য হত্যা করার মতো অশান্তি তাদের সংসারে ছিলো না।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নিহতের স্বামী মাসুদ মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার একটু বাজে নেশা আছে সত্যি, তাই বলে আমি আমার তিন কণ্যার মাকে হত্যা করেছি এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। আর কেনই বা তাকে হত্যা করবো?

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয় কতিপয় মানুষ আমার স্ত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। তারা ফায়দা লুটতে আমাকে ফাঁসাতে আমার শ্যালককে ব্যবহার করছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই ধরনের কোন অভিযোগ আমি শুনিই নি। আর এমন কিছু ঘটে থাকলে সেটা থানা পুলিশ তদন্ত করে দেখবে।

এব্যাপারে বাকেরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলাউদ্দিন মিলন বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোন অভিযোগ নিয়ে কেউ আসেনি। এমনকি মৌখিকভাবেও কেহ জানায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা বা অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।


/ইই
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন