ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

Motobad news

আমতলীতে বিরল প্রজাতির গুই সাপ উদ্ধার

আমতলীতে বিরল প্রজাতির গুই সাপ উদ্ধার
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরগুনার আমতলীতে একদল যুবকের মমতা আর ভালোবাসায় প্রাণে বেঁচে গেলো বিরল প্রজাতির এক গুইসাপ। পৌর শহরের সবুজবাগ এলাকায় ওয়াহিদের  মুরগীর খোয়ারে পাতা জালের ফাঁদে এটি ধরা পরে। গুইসাপটি  প্রায় ১০ কেজি ওজনের ৭ ফুট লম্বায়। সেটিকে উদ্ধার করে পরে বাগানে অবমুক্ত করা হয়েছে। 

জানা গেছে, সবুজ বাগের ওয়াহিদের মুরগীর খোয়ার থেকে প্রতিদিন ছোট ছোট মুরগীর বাচ্চা নিখোঁজ হওয়ায় ওয়াহিদ উদ্বিগ্ন হয়ে পরে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওয়াহিদ খোয়ারে চারদিকে জালপেতে ফাঁদ তৈরী করেন। রবিবার সকালে মুরগির খেয়ারে নিকটে গিয়ে দেখেন জালের ফাঁদে একটি বিশাল আকৃতির গুইসাপ আটকে রয়েছে। গুই সাপটি দেখতে তামাটে লালচে বর্নের। এই ধরনের গুই সাপ সচরাচর এই এলাকায় এখন আর দেখা যায় না। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার জিহাদের নেতৃত্বে একদল যুবক ছুটে আসে। এবং তারা এই গুইসাপটি না মেরে বনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেন। পরে সেটি একটি কাঠের বাক্সে বন্ধী করে বাসুগী গ্রামের পাতা বনে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় ষাটোর্ধ আম্বিয়া বেগম বলেন, আমরা ছোট বেলায় এরকম অনেক  গুইসাপ দেখতাম। বাড়ীর বাগানে ঘোরাঘুরি করত। এখন  বিশ বছরের মধ্যেও এরকম বড় আকারের  গুঁই  সাপ আর দেখি নাই।

গুঁইসাপটি উদ্ধার করা জিহাদ বলেন, প্রাণীর প্রতি মায়ার কারনে আমরা গুইসাপটিকে মারতে না দিয়ে সেটি উদ্ধার করে বনে ছেড়ে দিয়েছি। 

আমতলী উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা, আবু সাঈদ বলেন, গুই সাপ পরিবেশ বান্ধব ও মানুষের জন্য অনেক উপকারী একটি প্রানী। একে আমাদের বাঁচিয়ে রাখা দরকার।

পটুয়াখালী বিঞ্জান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যানিমাল সাইন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মো. আহসানুল রেজা বলেন, গুই সাপ মানুষ এবং পরিবেশ বান্ধব একটি প্রানী। ময়লা নোংড়া, বিষাক্ত পোকা মাকর এবং ইদুর ও বিষাক্ত সাপ খেয়ে এরা বেঁচে থাকে। এতে মানুষ অনেকটা নিরাপদে বসবাস করতে পারে। গুই সাপ মিঠা এবং লবন পানিতে বসবাসের উপযোগী একটি উপকূলীয় প্রানী। তবে এটি বর্তমানে অকেটা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কারন হিসেবে তিনি বলেন, না বুঝে মানুষ এটিকে নির্বিচারে হত্যা করে ফেলা। আবার অনেকে গুই সাপ মেরে টাকার লোভে চামরা বিক্রি করে। অনেক উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকজন এটির মাংস খাওয়ার ফলেও বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

ড. মো. আহসানুল রেজা আরো বলেন, তামাটে এবং লালচে গুই সাপ সাধারনত ৭-৮ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর ওজন ৮-১০ কেজি পর্যন্ত হয়। এদের গড় আয়ু ২৫-৩০ বছর। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশীও বেঁচে থাকে এরা।


এমইউআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন