ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

তিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানের কাজ চলছে খননযন্ত্রে!

তিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানের কাজ চলছে খননযন্ত্রে!
খননযন্ত্রে ভরাট করা হয় রাস্তা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পটুয়াখালীতে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে (ইজিপিপ) প্রথম ধাপে শ্রমিকের পরিবর্তে খননযন্ত্র দিয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে। এতে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় শ্রমিকরাও কাজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে বিশেষ করে কর্মহীন মানুষের জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে প্রতি বছর সরকার শ্রমিকদের দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু কাজ করিয়ে অর্থ দিয়ে থাকে। সরকারিভাবে এই প্রকল্পকে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) নাম দিলেও স্থানীয়ভাবে এটি ৪০ দিনের কর্মসূচি হিসেবে পরিচিত। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এবার পটুয়াখালী সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৩৫টি মাটির রাস্তা নির্মাণের জন্য ৯৭৮ জন শ্রমিকের বিপরীতে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কাগজেকলমে থাকলেও বাস্তবে এসব প্রকল্পের অধিকাংশেই কোনো শ্রমিকের অস্তিত্ব নেই।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, সদর উপজেলা পরিষদের তালিকার প্রথমে থাকা লাউকাঠি ইউনিয়নে এই প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমিকদের দিয়ে তিনটি সড়ক নির্মাণ করার কথা। ১০১ জন শ্রমিক দিয়ে ৪০ দিনে এই কাজ শেষ করতে মোট ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

বাস্তবে তিনটি প্রকল্পের কোনোটিতেই শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হয়নি। মাটির রাস্তা নির্মাণে খননযন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। একদিনেই মাটি ফেলে দিয়ে চলে যায় খননযন্ত্র। এতে শ্রমিকরা যেমন কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তেমনি সড়কের পাশে থাকা মানুষের গাছপালাসহ তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।

অন্যদিকে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি চলমান থাকার সময় নিয়মিত তদারকি থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তার ছিটেফোঁটাও চোখে পড়েনি।

লাউকাঠি ইউনিয়নের নয়া মিয়ার বাড়ি থেকে হাজি বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের শেষ অংশের হাজি বাড়ির বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল মালেক বলেন, ‘ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করছে। কাজ এখনো শেষ হয়নি। ভেকু মাটি ফেলে রাখায় চলাচলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। প্রথমে শুনেছিলাম শ্রমিক দিয়ে রাস্তার কাজ করানো হবে। পরে দেখলাম শ্রমিক ছাড়াই কাজ হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লাউকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম খোকন গনমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকার শ্রমিক প্রতি দৈনিক ৪০০ টাকা হারে মজুরি নির্ধারণ করলেও এই টাকায় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আর সে কারণেই আমরা ভেকু মেশিন ব্যবহার করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে শ্রমিকের পরিবর্তে খননযন্ত্রের ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। যদি খননযন্ত্র ব্যবহার করা হয় তবে এ বাবদ কোনো বিল দেওয়া হবে না। এছাড়া এবার শ্রমিকদের নামে নামে অ্যাকাউন্ট করা হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হবে।

গত ২২ জানুয়ারি থেকে পটুয়াখালী সদর উপজেলায় শুরু হওয়া সরকারের এই কর্মসূচি আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন