চরফ্যাসনে প্রায় বিলুপ্তির পথে গরুর গোবরের তৈরি জ্বালানি ঘই


আশির দশকের আগে চরফ্যাসন উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামগঞ্জে দরিদ্র অসহায় খেটে খাওয়া মানুষগুলোর সংসারে রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে গরুর গোবরের তৈরি ঘই লাকড়ি কাজে ব্যবহার করতেন। তখন গ্রাম গঞ্জের নারীরা বর্ষা কালের লাকড়ির কথা মাথায় রেখে ফসলের মাঠ থেকে শুরু করে বাড়ির আনাচে-কানাচে গরুর গোবর কুড়িয়ে নানান রকম লাকড়ি তৈরি করে জ্বালানি হিসেবে বর্ষা কালে বাসাবাড়িতে ব্যবহার করতেন এই ঘই। এখন তা প্রায় বিলুপ্তির পথে।
ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে গরুর গোবর দিয়ে লাকড়ি তৈরি করা জ্বালানি ঘই এখন আর চোখে পরে না। দক্ষিণ আইচা থানার স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদ চৌধুরীর বলেন, বিজ্ঞানের জয় যাত্রায় বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সিলিন্ডারের প্রচলনে জন জীবনে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগায় বিকল্প জ্বালানির সন্ধান পাওয়ায় এখন আর প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জের মহিলার বাড়ির আঙিনা কিংবা মেঁটো রাস্তার কিনার ঘেষে পূর্বের মতো ঢোল কলমি দিয়ে ঘই তৈরি করে সারি সারি বাঁশের সাথে বেঁধে সূর্যের আলোতে শুকানো আগের মতো এখন আর দেখা যাচ্ছে না।
চরপাতিলার বাসিন্দা নাসরিন বেগম বলেন, এখন আর আগের মতো মহিষ, গরু না থাকার কারণে আমরা ঘই তৈরি করতে পারছি না।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে সড়ক যোগাযোগ ততটা আধুনিক নয় কিংবা গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছানোর সুযোগ নেই কিংবা বাড়ির চারপাশে পর্যাপ্ত গাছ লাগোনোর জায়গা নেই সেই সব স্থানে টিকে আছে এই গোবরের তৈরি জ্বালানি ঘই।
এই ঘই তৈরি করে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করলে কি ক্ষতি হতে পারে এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.শোভেন বসাক বলেন, গ্রামের সাধারণ মানুষগুলো তারা জানে না, গোবর থেকে পেটের পীড়াসহ কৃমির সমস্যা হতে পারে। একজন চিকিৎসক হিসেবে স্বাস্থ্য সচেতনতায় আমি মনে করি, অল্প লাভের চিন্তা না করে, রোগ-জীবাণু আছে এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে এসব নোংরা পরিবেশে না যাওয়াই ভালো।
এমইউআর
