আমতলীতে ইটভাটার ট্রাকে লন্ডভন্ড গ্রামীণ সড়ক
.jpg)
বরগুনার আমতলী উপজেলায় নিয়ম নীতি ভঙ্গ করে যেখানে সেখানে অনুমোদনহীন ইটের ভাটা গড়ে উঠার কারণে গ্রামীণ সড়কগুলো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। এ বছর তেমন ঝড় বৃষ্টি না থাকায় বছর জুড়ে ইট বানাতে গিয়ে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মাটি ও ইটবোঝাই করে ট্রাক পরিবহনের কারণে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়ছে উপজেলার বেশির ভাগ গ্রামীণ পাকা সড়ক। ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আবার সামান্য বৃষ্টি হলে সড়ক গুলো ভাগাড়ে পরিনত হয়ে মানুষকে ঘরে আবদ্ধ থাকতে হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, কুকুয়া ইউনিয়নের হাজার টাকা বাঁধ পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারের একটি পাকা গ্রামীণ সড়ক রয়েছে। এই সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে ৫টি ইটভাটা। গ্রামীণ পাকা সড়কে দশ টনের বেশি ওজনের মালবাহী ট্রাক চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকলেও এসব ভাটায় ১৫/২০ টনের ট্রাক দিয়ে প্রতিদিন মাটি, ও ইট পরিবহন করা হচ্ছে। ফলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
খেকুয়ানী গুলিশাখালী সড়কে প্রতিদিন ভারি ট্রাকবোঝাই করে ইটভাটাগুলোতে মাটি ও ইট বহন করা হচ্ছে। সড়কটি বর্তমানে ট্রাকের চাকায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সড়কটি শুস্ক মৌসুমে ধূলোময় ও বর্ষার মৌসুমে কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। এসব গ্রাম গুলোতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। ভারি ট্রাক পরিবহনের কারণে এসব সড়কের পুরাতন সেতুগুলোও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে গ্রামীন সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সরেজমিনে ঘুরে উপজেলার প্রায় সকল গ্রামীণ সড়কের একই অবস্থা লক্ষ করা গেছে। এ গুলো দেখার মতো কেউ নেই।
উপজেলার হাজারটাকার বাঁধ এলাকার ভ্যানচালক মো. সজিব মিয়া, বলেন, পাকা সড়ক কইরা লাভ কী? ইটভাটার মাটি ও ইট টানার ট্রাকে সড়কটা শেষ কইরা দিছে। ধুলায় আর ভাঙ্গার কারণে ভ্যান চালানো যায় না।
উপজেলার সাহেববাড়ী গাজীপুর সড়ক, পৌরসভার বটতলা কাউনিয়া সড়ক, কুকুয়া আজীমপুর বাজার, রায়বালা খাকদোন সড়ক, তালুকদার বাজার সড়ক, ঘটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক. খেকুয়ানী বাজারের দক্ষিন পাশের সড়ক, গোছখালী সড়ক। গোপখালী সড়ক, আমতলী সদরের মহিষডাঙ্গা সড়কসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গ্রামীন সড়কগুলো ধ্বংসের পথে।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, তিন ক্যাটাগরিতে আমতলী উপজেলায় প্রায় ২২৫ কিলোমিটার পাকা সড়ক আছে। যার মধ্যে উপজেলা সড়ক ৭৫ কিলোমিটার, ইউনিয়ন সড়ক ১৫০ কিলোমিটার, ক-শ্রেণির গ্রামীণ সড়ক ২০০ কিলোমিটার, খ-শ্রেণির গ্রামীণ সড়ক ২৫০ কিলোমিটার।
এছাড়া কাঁচা রাস্তা আছে ৫০০ কিলোমিটার। একই সাথে ক্ষতি হচ্ছে গ্রামীণ কাঁচা সড়কেরও। ইটভাটা মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় ক্ষতিড়ু জনগণ প্রতিবাদ করেও কোনো সুফল পাচ্ছে না।
উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কেউ কারও কথা শোনে না। সড়কে স্টিলের ব্যারিকেড তৈরি করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করা হলে গ্রামীণ সড়ক টেকানো যাবে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, গ্রামীন সড়কে বেপরোয়া ওই যানবাহন গুলোর বিষয়ে শীঘ্রই অভিযান চালানো হবে।
এমইউআর