বাড়তি আয়ের আশায় এক রাতের ভিক্ষুক


মহিমান্বিত রজনী লাইলাতুল বরাত আজ। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় শুক্রবার সারাদেশে পবিত্র শবে বরাত পালিত হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা এই রাত নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও বিভিন্ন এবাদত করে পার করছেন।
অপরদিকে রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদের প্রবেশদ্বারে দেখা গেছে অগণিত মৌসুমি ভিক্ষুক। তাদের মধ্যে বাড়তি আয়ের আশায় অনেকে এক রাতের জন্য ভিক্ষুক বনে গেছেন।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) রাতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে দেখা গেছে অনেক ভিক্ষুককে। অধিকাংশ ভিক্ষুকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এক রাতের জন্য ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিয়েছেন। এতে তারা বাড়তি আয় করেন।
তাদের মধ্যে একজন গৃহকর্মী রাশেদা খাতুন (৩০)। স্বামী তাকে ছেড়ে অন্যত্র বিয়ে করেছেন। এক কন্যা সন্তান নিয়ে বসবাস করেন ফকিরাপুল এলাকায়। কাজ করেন তিন বাসায়। কিছু বাড়তি আয়ের আশায় একরাতের জন্য ভিক্ষাবৃত্তিতে নেমেছেন রাশেদা।
বলেন, ‘আমি ভিক্ষা করি না। স্বামী তালাক দিয়া আরেকটা বিয়া করছে। মানুষের বাড়িতে কাজ কাম করি। একটু আয়ের জন্য মসিজিরে দ্বারে আইছি।’
আরেক মৌসুমি ভিক্ষুকের সঙ্গে কথা হয়। তার নাম রুবেল, জন্মস্থান বরিশাল সদর। ঢাকার সদরঘাটে বসবাস করেন।
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দিন ঠেলাগাড়ি ঠেলি। বছরে মনে করেন আমরা শবে বরাতের দিন আসি (ভিক্ষা করি)। আর আসি না।’
কথা হয় আরেক মৌসুমি ভিক্ষুক আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গে। তিনি ভোলা চরফ্যাশন উপজেলা থেকে এসেছেন। তার ছয় ছেলে চট্টগ্রামে দিন মজুরের কাজ করেন। কোনো রকমে দিন চলে তাদের। তবে প্রতি শবে বরাতে বায়তুল মোকাররম মসজিদে আসেন এবং ভিক্ষা করে পরের রাতে সদরঘাট থেকে লঞ্চ ধরে চলে যান ভোলা।
আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘আমার কিছু নাই। দুইদিন ঢাকায় আইচি। ভিক্ষা কইরা নামাজ পইড়া কাল লঞ্চে উটুম। আয়ও হইলো, ইবাদতও হইলো।’
এইচকেআর
