ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

৫০ মামলায় মুক্তি পেয়ে ঘরে ফিরলো ৭০ শিশু

৫০ মামলায় মুক্তি পেয়ে ঘরে ফিরলো ৭০ শিশু
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

কেউ খেলার ছলে, কেউবা বন্ধুর সঙ্গে মিশে ছোটখাটো অপরাধে যুক্ত হয়েছিল। এদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় আদালতে এসে হাজিরা দিতে হতো। অপরাধী হিসেবে হাজিরা দেওয়ার সময় শিশুদের যেমন মন খারাপ হতো, অভিভাবকরাও হতেন বিব্রত ও লজ্জিত।

জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে এমন ৭০ শিশুকে সংশোধনের জন্য বাবা মায়ের কাছে ফেরত পাঠালেন আদালত। আদালতের নির্দেশে তাদের হাতে বাংলাদেশের পতাকা, ফুল আর ডায়রি তুলে দিয়েছেন আদালতের কর্মীরা।

সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এবং শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই ব্যতিক্রমী রায় দেন।

সুনামগঞ্জে বিভিন্ন সময়ে দায়ের হওয়া ৫০টি মামলায় ৭০ জন শিশুকে আদালতে এসে হাজিরা দিতে হতো। মারামারি, ছোটখাটো চুরির অভিযোগ আনা হয়েছিল এদের বিরুদ্ধে। কোমলমতি এসব শিশুদের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়ে। তাদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হওয়ার উপক্রম হয়।

আদালত এই শিশুদের কারাগারের পরিবর্তে মা-বাবার জিম্মায় ফেরত পাঠিয়ে শিশুদের জীবন সুন্দর ও মানবিক গুণাবলি নিয়ে বেড়ে ওঠার জন্য সংশোধনের শর্ত দেন। আদালতের এমন রায়ে আবেগাপ্লুত হয়েছেন অভিযুক্ত শিশু ও তাদের অভিভাবকরা।

আদালতের দেওয়া শর্তাবলির মধ্যে রয়েছে নিয়মিত পড়াশুনার পাশাপাশি প্রতিদিন কিছু ভালো কাজ করা ও ডায়রিতে লিখে রাখা, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা, সবার সঙ্গে সদ্ভাব রাখা এবং ভালো ব্যবহার করা, বাবা-মাসহ গুরুজনদের আদেশ নির্দেশ মেনে চলা এবং বাবা মায়ের সেবা যত্ন করা, কাজে কর্মে তাদের সাহায্য করা, নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা এবং ধর্মকর্ম পালন করা, প্রত্যেকে কমপক্ষে ২০টি করে গাছ লাগানো এবং গাছের পরিচর্যা করা, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা, মাদক থেকে দূরে থাকা, ভবিষ্যতে কোনো অপরাধের সঙ্গে নিজেকে না জড়ানো।

 

এসব শর্ত প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা তা প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রতি তিনমাস অন্তর আদালতকে অবহিত করবেন।

সুনামগঞ্জ প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান বলেন, আদালতের দেওয়া শর্ত শিশুরা মানছে কি না সেটা তদারকি করার দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছে। আসলে আদালতের এমন রায় প্রশংসনীয়।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রবিউল লেইছ রোকেস  বলেন, এই রায়ের ফলে ছোট খাট অনেক মামলাই দ্রুত নিষ্পত্তি হলো। শিশুরা তাদের আপন ঠিকানা ফিরে পেলো। মা-বাবা তাদের সন্তানকে নিজের কাছে রেখে সংশোধনের সুযোগ পেলেন।

সুনামগঞ্জ শিশু ও মানবপাচার ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট হাসান মাহবুব সাদী গনমাধ্যমকে বলেন, ব্যতিক্রমী রায়ের দিনটি স্মরণীয় ও ইতিহাস হয়ে থাকবে পুরো বাংলাদেশে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

সর্বশেষ