ঢাকা শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

হাওরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, কাঁচা ধান ঘরে তুলছে কৃষক

হাওরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, কাঁচা ধান ঘরে তুলছে কৃষক
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ভারতের উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কিশোরগঞ্জে হাওরের নিম্নাঞ্চলের বোরো ধানের জমি তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় কৃষক পরিবার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। একমাত্র বোরো ফসল নিয়ে স্বপ্ন ভাঙছে তাদের। শনিবার বিকেল থেকেই ঢলের পানি এসে ঢোকা শুরু করে বিভিন্ন হাওরে। নদীর তীরবর্তী চরগুলো তলিয়ে যাচ্ছে। দুরবস্থা তাকিয়ে দেখা ছাড়া এই মুহূর্তে কিছুই করতে পারছেন না কৃষক। কারণ কাঁচা ধান কাটারও কোনো উপায় নেই।

উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ধনপুরের হাপনিয়া, রামপুরের চর, চরপাড়ার হাওর ও কাটুইল হাওরের নদীসংলগ্ন বেশকিছু জমি তলিয়ে গেছে। তার হিসাবে প্রায় ৪০০ একর জমির ধান পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ইটনার ছিলনী গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, তার বাহিরচর হাওরে এক একর জমি তলিয়ে গেছে। কাঁচা ধান কাটাও যাবে না। একই এলাকার কৃষক মন্নান মিয়া পাঙ্গাশিয়া হাওরে চাষ করেছিলেন চার একর। অন্যের জমি নিয়েছেন টাকার বিনিময়ে। ঢলের পানিতে সব তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

ধনপুরের কৃষক ফজলুল হক বলেন, তার নিজের জমি রয়েছে ১০ একরের বেশি। এরই মধ্যে নিচু এলাকার জমিতে পানি ঢুকে পড়েছে। তাই ভাবনায় পড়েছেন, ভবিষ্যতে কী হয় তা নিয়ে।

তিনি জানান, বর্গাচাষিরা সারা বছর শ্রম দিয়ে জমিতে ফসল ফলিয়েছেন। সেই ফসল এখন চোখের সামনে ডুবে যাচ্ছে। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করতে পারছেন না তারা।

ইটনার রমানাথপুর গ্রামের কৃষক আলাল মিয়া বলেন, দুই বছর করোনার কারণে বাড়ির বাইরে কোথাও গিয়ে কিছু করতে পারিনি। কৃষিজমিই তাদের পরিবারের একমাত্র সম্বল। কিন্তু হঠাৎ ঢলের পানি আসায় তাদের সম্বলও ডুবে যাচ্ছে।

ইটনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উজ্জ্বল সাহা বলেন, এখন পর্যন্ত তাদের হাতে আসা তথ্যমতে ধনপুর হাওর, বাদলা হাওর, সদর ইউনিয়নের এরশাদনগর, আলালের বন, বেতেগাসহ এলংজুরী ইউনিয়নের বিভিন্ন হাওরে পানি ঢুকেছে। এই কর্মকর্তা দাবি করেন, যে জমিগুলোতে পানি ঢুকেছে বা যেগুলো ডুবেছে, সেই জমিগুলো মূল হাওরের জমি না। এগুলো নদীর তীরবর্তী বা বিভিন্ন খালে চাষ করা বোরো ধানের ক্ষেত। তবে হাওরের নদীগুলোতে পানি বাড়ছে। পানি এভাবে বাড়তে থাকলে বোরো ধানের বড় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ছাইফুল আলম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মেঘালয় ও আসামের চেরাপুঞ্জিতে ৩৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই বৃষ্টির পানি এসে হাওরে ঢুকে পড়েছে। এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ জমি পানিতে তলিয়েছে, তার সঠিক তথ্য তাদের কাছে এখনও আসেনি। তবে মূল হাওরে এখনও পানি ঢুকতে পারেনি। তাই ভয়ের কারণ নেই।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দিরাইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী এ টি এম মোনায়েম হোসেন বলেন, দিরাই উপজেলার আটটি ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজার রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে বাঁধে পাইলিং করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন বলেন, কোনো বাঁধে ঝুুঁকি তৈরি হলে দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এমইউআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন