হারিয়ে যাচ্ছে বরগুনায় পানের বরজ

পান গ্রামীন জনগোষ্ঠীর একটি পান পাতায় রয়েছে গ্যাস্ট্রো প্রটেকটিভ, অ্যান্টি-ফ্লটুলেন্ট এবং কার্মিনেটিভ এজেন্ট যার কারণে পান চাবানোর সময় মুখে স্যালাইভা তৈরি করে। যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে।
বরগুনা জেলার সদর উপজেলা সহ সকল উপজেলা পাথরঘাটা, বামনা বেতাগী,আমতলী,তালতলীতে ব্যাপক পরিমানে পান চাষ করা হয়। এই জেলার মাটি ও আবহাওয়া পান চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় শত বছর আগেও এখানে অধিক হারে পান চাষ করা হতো।
জেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় র্বতমানে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে ৪০২ হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হচ্ছে। বর্তমানে মোট বরজের সংখ্যা ৪৪১৭ টি, আর পান চাষী আছে ৩২৩১ জন। এই বরজ থেকে বছরে মোট ২০২৩ মেট্রিক টন পান উৎপাদন হয়। উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় ও প্রশিক্ষণ এবং সহায়তার অভাবে মুখ ফরিয়ে নিচ্ছে পান চাষীরা। ফলে হারিয়ে যেতে পারে পান চাষের ঐতহ্যি।
এখানকার উৎপাদতি পান বরগুনার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হয় বরিশাল, ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে বরগুনার বিভিন্ন পাইকারী হাট থেকে পান সংগ্রহ করে নিয়ে যায় । তাদের সংগৃহীত পান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদা অনুযায়ী পান বাজারজাত করেন পাইকার।
বামনা উপজেলার রমনা ইউনিয়ন এর চাষী গোবিন্দ দাস জানান, আমি নিজস্ব ৭০ শতক জমিতে পান চাষ করি। উৎপাদন বাড়ানো, রোগব্যাধি নির্মূল, সার ও কীটনাশকরে সঠিক ব্যবহার সর্ম্পকে আমাদের কোন ধারণা না থাকায় নতুন করে পান চাষে কেউ আগ্রহী হচ্ছে না। উপাদানরে খরচের পরিমান বেশি হওয়ায় পুরোনোরাও মুখ ফরিয়িে নিচ্ছেন পান চাষ থেকে। ফলে ধীরে ধীরে হারয়িে যেতে বসেছে আমাদের পান শিল্প।
পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের চাষী যোগীশ্বর বলেন, পারিবারিক ভাবে আমরা গত ৫০ বছরের ও বেশি সময় ধরে পান চাষ করি। আমার সংসারের একমাত্র আয়রে উৎস পানের বরজ। তবে বর্তমানে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় পান চাষ কমিয়ে সেই জমিতে অন্যান্য সবজি চাষ করি।
বরগুনা সদর উপজেলার পানচাষি রতন দাস বলেন, পরিবারের ঐতহ্যি হিসেবে র্পূব পুরুষদরে ন্যায় আমি মাত্র ত্রিশ শতক জমিতে পান চাষ অব্যহত রেখেছি। আগে দেড়-দুই একর জমিতে পান চাষ করতাম। তবে সরকারি ভাবে কোন প্রকার সুযোগ সুবিধা পেলে আবারো চাষাবাদ বৃদ্ধির ইচ্ছা আছে।
একই গ্রামের চাষী মো. হারুন জানান, আমি নতুন পান চাষী পান চাষের বিষয় বেশি একটা জানিনা। আমি গতবছর পানচাষে বেশি লাভবান হতে পারি নি। কৃষি অফিস যদি আমাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন, তাহলে ভালো করে প্রশিক্ষণ নিয়ে পান চাষ করলে আমরা লাভবান হতে পারবো।
বরগুনা জেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন , আমি বরগুনাতে নতুন এসেছে। এখন পর্যন্ত বরগুনার বিষয়ে বেশি কিছু জানতে পারিনি। তবে আমি কথা দিচ্ছি যে পানচাষীদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো।এবং যদি কোনো পান চাষী আর্থিক প্রণোদনার আবেদন করেন তাহলে কৃষি দফতর থেকে তাদের জন্য যতটুকু পারা যায় ব্যবস্থা করা হবে।
মো. রাসেল/বরগুনা
এইচকেআর