ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

Motobad news

বরগুনায় পলিথিনের ব্যবহারে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ

বরগুনায় পলিথিনের ব্যবহারে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরগুনা জেলার হাট বাজার গুলোতে পলিথিনের ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ সরকার বিভিন্নভাবে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ ও আইন করলেও তা অমান্য করা হচ্ছে সব জায়গায়।

বরগুনার সকল হাট বাজারের বিভিন্ন মুদিখানা দোকানে পলিথিন ব্যাগ মজুদ রেখে বিক্রি করা হচ্ছে। আর যারা এই পলিথিন ব্যাগ ক্রয় করে তারা বিভিন্ন ভাবে এটার ব্যবহার করছে। তার প্রতিনিয়ত এই পলিথিন ব্যাগে সব ধরনের দৈনন্দিন মালামাল বিক্রি করছে।পলিথিল বন্ধে নেয়া হয় না কোনো ব্যাবস্থা। এই সমস্ত পলিথিন ব্যাগের অধিকাংশই নিলা এবং সাদা রংয়ের। 

দোকানীদের অভিযোগ তারা পলিথিন অন্য কিছু ব্যবহার করলেও তাদের  দোকানের বিক্রয় ও কমে যাচ্ছে। দোকানের সকল প্রকার মালামাল বিক্রয়ে গ্রাহকদের দেয়া বিভিন্ন ধরনের পলি ব্যাগ। 

বরগুনা জেলার  প্রতিটা উপজেলার হাট বাজার গুলোর বিভিন্ন জায়গায় পলি ব্যাগে ভরে গেছে। ময়লা ফোলর জায়গা গুলোতে পলি ব্যাগের স্তুপ জমে গেছে। পরিবেশকে বাচাতে হলে প্রথমে পলি ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করা দরকার। কোন ভাবেই লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না এই পলিথিন এর উৎপাদন ও ব্যবহারে।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক এই অপচনশীল উপাদান পলিথিন ব্যাবহারে আমাদের স্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্য জিবন মারাত্মক হুমকির মুখে পতিত হচ্ছে।পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারে চর্মরোগ, ক্যান্সারসহ আরও জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। 

চিকিৎসাবিজ্ঞানে পলিথিন ব্যাগকে চর্মরোগের এজেন্ট বলা হয়। পলিথিনে মাছ, মাংস মুড়িয়ে রাখলে কিছুক্ষণ পর এতে রেডিয়েশন তৈরি হয়ে খাবার বিষাক্ত হয়ে ওঠে। পলিথিনে রঙ করার জন্য ব্যবহৃত ক্যাডমিয়াম মানব শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। উন্নত দেশগুলোয় ক্যাডমিয়াম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বর্তমানে শহর ও গ্রামাঞ্চলের কাচাবাজার,গোস্তের দোকান,মাছের দোকান এই সব দোকান থেকে বিভিন্ন পন্য সামগ্রি ক্রয় করলে দেয়া হচ্ছে পলি ব্যাগ।এখন অনেক ফার্মেসীতে ও এই ব্যাগের ব্যাবহার দেখা যায়।

বরগুনা জেলা পৌর শহরে কেনা কাটা করতে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, সল্প পুজিতে বেশি মুনফা লাভের আসায় কিছু কিছু অসাধু জড়িয়ে পরছেন এই পলিব্যাগ বানিজ্যে। মুলত এই পলিব্যাগ গুলো কোথায় উৎপাদন হচ্ছে সে সকল কারখানা গুলো চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যাবস্থা নেয়া উচিত।

মুদি দোকানের ক্রেতা রফিক বলেন, আমি দোকান থেকে ডাল আর চিনি ক্রয় করলাম দোকানদার আমাকে সব গুলো মালামাল পলি ব্যাগে দিয়েছেন। দোকানদার আর একটু খরচ করলে কিন্তু আমাকে কাগজের ব্যাগে দিতে পারতো। তারা বেশি মুনফা লাভের আসায় এই পলি ব্যাগ ব্যবহার করছেন। যদি মাঝে মধ্যে মোবাইল কোর্ট দেয়া হয় এই পলি ব্যাগের জন্য। তাহলে দোকানীরা আর এই পলি ব্যাগ ব্যবহার করবে না বলে আমার মনে হয়।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র তালতলী উপজেলা সমন্নয়ক আরিফ রহমান বলেন,এখন কাগজ ও পাটের ব্যাগের ব্যবহারই আমাদের পলিথিনের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে পারে। পাটের ব্যাগ পরিবেশবান্ধব। পলিথিনের উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধে সরকারের ব্যাপক নজরদারিসহ প্রচার মাধ্যমগুলোতে (রেডিও, টেলিভিশন, পত্র-পত্রিকা) ব্যাপক প্রচারণার দরকার। এভাবে পলিথিনের ক্ষতিকারক দিকগুলো সাধারণ মানুষের দৃষ্টিগোচর করার পর কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে পলিথিন ও প্লাস্টিকের বর্জ্যগুলোর ব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, পলিথিন মানব দেহের জন্য একটি মারাত্মক ক্ষতিকারক উপাদান যা শত বছরেও নস্ট হয় না। আমদের নদী নালা, পুকুর, ড্রেনের স্বাভাবিক পানির প্রবাহ গতরোধ করে।এতে করে ফসলি জমি হুমকি মুখে পড়তে পারে। তা ছাড়া জমিতে পানি শোষন করতে বাধা প্রদান করে। বর্তমানে আমাদের চোখের সামনে এই পলিথিনের ব্যবহার দেখছি। আসলে এই পলিথিন ব্যবহারে এক সময়ে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পতিত হবে। এখন থেকেই আমাদের সচেতন হতে হবে এই পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করার জন্য। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর আবস্থানে যেতে হবে।


রাসেল/এসএমএইচ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন