ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

Motobad news

বরগুনায় অবাধে শিকার রেণু পোনা

বরগুনায় অবাধে শিকার রেণু পোনা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরগুনা জেলার বিষখালী,পায়রা ও বলেশ্বর নদীতে চলছ অবাধে গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা শিকার । জেলার অন্তত এক হাজার কিলোমিটার এলাকায় এই রেণু শিকার করছেন অবৈধ জেলার। রেণু শিকারে মশারি জাল ব্যবহার করার কারনে প্রতিদিনই ধ্বংস হচ্ছে হাজার হাজার প্রজাতির দেশীয় মাছের পোনা, মাছের ডিমসহ নানান প্রজাতির জলজ প্রাণী। যদিও এসব জাল ব্যবহার ও পোনা শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। বিশেষ করে চৈত্র থেকে আষাঢ়, এ চার মাস গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা শিকার করে উপকূলীয় জেলে ও তাদের স্ত্রী-সন্তানরা।

বরগুনা সদরের গোলবুনিয়া, পুরাকাটা, বড়ইতলা, চালিতালতলী,তালতলীর শুভসন্ধ্যা, জয়ালভাঙা, সোনাকাটা ও বগী এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীতে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার জেলে মশারি জাল টানছেন। সেসব জালে আটকে থাকে বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেণুসহ হাজার হাজার প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী ও মাছের ডিম। জেলেরা একটি পাত্রে সেসব রেণু, মাছ রেখে আবারও নেমে যাচ্ছেন মশারি জাল নিয়ে। আর নারী ও শিশুরা পাত্রে রাখা মাছ থেকে রেণুগুলো আলাদা করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা, মাছের ডিম ও জলজ প্রাণী তীরেই ফেলে রাখছেন। আবার কেউ কেউ আলাদা পাত্রে রেখে দিচ্ছেন।

রেণু পোনা শিকারি সদর উপজেলার পুর্ব কেওয়াবুনিয়া গ্রামের জেলে লিটন মিয়া বলেন, প্রতিদিন যে রেণুগুলো ধরি, তা সপ্তাহ শেষে  বিক্রি করি। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫ থেকে ১৬শ টাকা করে তারা আয় হয়। চৈত্র, বৈশাখ, জৈষ্ঠ ও আষাঢ় এই চারমাস রেণু পোনা ধরি। বছরের বাকি ৮ মাস ফসলের ক্ষেতে মজুরের কাজ করি। রেণু ধরার সময় অন্য প্রজাতির অনেক পোনা মারা যায়, জানি ক্ষতি হচ্ছে, কিন্তু আমরা নিরূপায়। রেণু শিকার করেই আমাদের সংসার চলে।

সদরের গোলবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা শিউলি আক্তার বলেন, আমি এই সময় বাগদা রেনু পোনা সংগ্রহ করি। কিন্তু দাম তো ঠিকমতো পাই না ১০০ পোনর দাম দেয় ৩০ টাকা।  পাইকার বলে পোনা বিক্রি করা যায় না কোস্ট গার্ড পোনা ফেলে দেয়। 

শিউলি আরও বলেন, আমাদের কষ্টের ফসল ভোগ করক পাইকাররা তারা আমাদের কাছ থেকে  ৩০ টাকা করে শত নিয়ে ১২০ টাকা বিক্রি করে।

তালতীর ফকিরহাট এলাকার জেলে হারুন মাঝি বলেন, গরীবের সংসারে অভাব লেগেই থাকে। রেণু শিকার না করলে পেটে ভাত পরবে না। তাই স্ত্রী সন্তান নিয়ে রেণু শিকার করে সংরক্ষণ করে রাখি। সপ্তাহে একদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আড়তদাররা এসে এসব রেণু কিনে নিয়ে যায়। বাগদা রেণু প্রতিশত বিক্রি হয় ৩০-৪০ টাকা দরে। আর গলদা রেণুর দাম ২০০ টাকায় প্রতিশত।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, রেণু শিকারের সময় কোটি কোটি মাছের ডিম ও পোনা মারা যায়। এভাবে রেণু শিকার করতে থাকলে বিভিন্ন মাছের প্রজাতি ধ্বংস হয়ে যাবে। সাগর নদী মাছশূন্য হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে আমরা জেলেদের ব্যপক সচেতন করেছি। এছাড়াও আমরা বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছি। অসাধু জেলেদের রুখতে আমাদের কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকবে। মাঝে মধ্যেই আমাদের অভিজান চলে।


এমইউআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন